চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

‘মধু হই হই’ গান গেয়ে ফলমন্ডীর শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:১৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে “মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা” গানটি গেয়ে গানের তালে তালে শাহাদাত হোসেন (২৪) নামের এক যুবককে দুই হাত বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।  ঘটনাটি গত ১৪ আগস্টের হলেও প্রকাশ্যে এসেছে গতকাল শনিবার (২১ আগস্ট)। পুলিশ জানায়, গত ১৪ আগস্ট নগরের দুই নম্বর গেট এলাকায় নির্মম এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার পর তার লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বেসরকারি একটি হাসপাতালের সামনে রাস্তায়।

 

এ ঘটনায় পরের দিন পাঁচলাইশ থানায় ভিকটিমের চাচা মোহাম্মদ হারুন অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু সেসময় তাকে ( শাহাদাত) মারধরের ভিডিওটি ফেসবুকে আসেনি। গত দুইদিন ধরে ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নড়েচড়ে বসে নগর পুলিশ প্রশাসন। জানা গেছে, হতভাগ্য শাহাদাত হোসেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানাধীন পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। থাকতেন নগরের কোতোয়ালী থানাধীন বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে।

 

মামলার বাদী জানান, শাহাদাত হোসেন বিআরটিসি এলাকার ফলমন্ডীতে কাজ করতেন। দুই বছর আগে শারমীন আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, গত ১৩ আগস্ট বেলা ২টার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় চলে আসবেন বলে তার স্ত্রীকে জানান শাহাদাত। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করেন শারমিন। এ সময় শাহাদাতের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

এর আগে রাত ৯টার দিকে খবর পেয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শাহাদাত হোসেনের নিথর দেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

ওইদিন রাতেই চমেক হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ সনাক্ত করেন তার স্ত্রী শারমীন আক্তার এবং মামলার বাদী হারুন। সেদিন রাতে মৃত অবস্থায় শাহাদাত হোসেনকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।

 

নগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন বলেন  “গত ২১ সেপ্টেম্বর এক যুবককে দুই হাত বেঁধে গান গেয়ে উশৃংখল কিছু জনতার মারধরের একটি ভিডিও আমাদের নজরে আসে। সেই ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে জানতে পারি মারধরের শিকার হতভাগ্য যুবকটিই শাহাদাত হোসেন। আমরা তার ( শাহাদাত হোসেন) স্ত্রীকে থানায় ডেকে পাঠাই। থানায় এলে ওই ভিডিও তাকে দেখানো হলে ভিডিও চিত্রে দেখা যাওয়া যুবকটি তার স্বামী বলে সনাক্ত করেন।”ঘটনাটি অমানবিক এবং বর্বরতা বলে মন্তব্য করে সিএমপির এই কর্মকর্তা জানান, “শাহাদাত হোসেনকে মারধরকারীদের সনাক্ত করে তাদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।” 

 

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট