টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের ফলে পর্যটন এলাকা সাজেকে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক নানাভাবে আটকা আছেন। শনিবারে শুরু হলে জেলার বাহির থেকে আসা রাঙামটির সাজেকে বেড়াতে গিয়ে এসব পর্যটকরা সাজেকে আটকা পড়েছেন। এরা বিভিন্ন আবাসিক রিসোর্টগুলোতে অবস্থান করছেন।
বিক্ষুব্ধ জুম্ম জনতার ডাকে তিন পার্বত্য জেলায় সড়ক অবরোধে দ্বিতীয় দিন চলছে খাগড়াছড়িতে। ফলে পর্যটকবাহী কোনো প্রকার যানবাহন ও ঢাকা-চট্টগ্রাম ফেনী কুমিল্লার দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। একইভাবে খাগড়াছড়ি জেলার সাথে নয়টি উপজেলার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। যার ফলে পর্যটকরা আটকা পড়া অবস্থা থেকে কোথাও যেতে পারছেন না। অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে কঠোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলো। খাগড়াছড়ি পৌর শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (টমটম), মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহনগুলো স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করেছে।
সাজেকের গাড়ির কাউন্টারের লাইন্সম্যান আরিফ জানান, এখানে প্রচুর পর্যটক রয়েছেন। তবে যানবাহন চলাচল না করায় সাজেক যাওয়া আসা করতে পারেননি।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) শিরিন আক্তার জানান, প্রায় দেড় হাজার পর্যটক সাজেকে অবস্থান করছেন। তারা নিরাপদে আছে। পরিস্থিতি ভালো হলে তারা মুভ করবেন।
তিনি আরও জানান, দীঘিনালার ঘটনার পর অবরোধকে ঘিরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এসব পর্যটকরা আটকা আছেন।
‘পাহাড়ি-বাঙালি’ সংঘর্ষ ও চারজন নিহতের ঘটনায় তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার অবরোধে স্থবির হয়ে গেছে খাগড়াছড়ি। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সাথে পণ্য ও যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ৭২ ঘণ্টা কর্মসূচির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ। অবরোধের সমর্থনে সকালে খাগড়াছড়ি সাজেক সড়ক, পানছড়ি, রামগড় সড়কে টায়ার জ্বালায় অবরোকারীরা। যান চলাচল বন্ধ থাকায় নিত্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতি পরিদর্শনে খাগড়াছড়িতে আসেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের ৪ উপদেষ্টা। তারা এখানকার রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময় সভা করার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সভা থেকে নানা গুজবে কান না দেওয়া ও পাহাড়ি-বাঙালি সকলকে সম্প্রীতি সৌহার্দের মধ্যে দিয়ে মিলিমিশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে চৌর্য্যবৃত্তির অভিযোগে নিহত হওয়া মামুনের স্ত্রী মুক্তা আক্তার বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা রুজু করেন।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় শাকিল, সাবেক পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম, সদ্য সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল আলমের নাম উল্লেখ রয়েছে বলে ওসি জানান।
তিনি আরও জানান, খাগড়াছড়িতে নিহত আরো দুইজনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেননি।
পূর্বকোণ/জহুর/জেইউ/পারভেজ