চট্টগ্রাম শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

তারা ফিরলেন ক্যাম্পাসের সেই উচ্ছল দিনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ

সকালের সূর্যটা তখনও পূর্বে হেলে ছিল। তার আগেই কিছু বয়োজ্যেষ্ঠদের কোলাহল মুখর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) পুরানো একাডেমি ভবন প্রাঙ্গণ। হাসি, আড্ডা আর আনন্দে তারা যেন ফিরলেন অতীতের সেই তারুণ্যের দিনে। ঘড়ির কাঁটা যখন ঘুরছে, সেই প্রাঙ্গণে হাজির হচ্ছেন একে একে নারী-পুরুষ অনেকেই। ছোট ছোট দলেও ক্যাম্পাস যেন অনেকটাই মুখোরিত। নবীন-প্রবীণের মিলনমেলায় পুরো ক্যাম্পাস মেতে ওঠে আনন্দ উৎসবে। বয়স ভুলে একদিনের জন্য সবাই ফিরে যান তারুণ্যউচ্ছল সেই দিনগুলোতে।
উপভোগ্য এমন দৃশ্যের দেখা মিলল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান চলে রাত পর্যন্ত। যেখানে সদ্য পাশ করা শিক্ষার্থীদের অংশ যেমন ছিল, তেমনি উপস্থিত ছিলেন ষাটের দশকের শিক্ষার্থীরাও। পুরো দিনটিই নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় রূপ নেয়। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উচ্ছাস একটু বেশিই ছিল। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অনেকেই ফিরে যান ক্যাম্পাসের সেই আনন্দঘন দিনগুলোতে। পরিচয় পর্ব, স্মৃতিচারণ ও প্রাক্তনদের আবেগপ্রবণ বক্তব্য যেন পুরোটা দিনকেই রাঙিয়ে দেয় প্রাণের উচ্ছাসে। ১৯৫৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু হয় দেশের অনেক কিংবদন্তি চিকিৎসক গড়ার এ সূতিকাগার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের। যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন মেডিকেল কলেজ। ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুক্রবার সকাল ১০ টায় বের করা হয় শোভাযাত্রা। এতে হাজারো প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার অংশগ্রহণে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার দেখা মেলে।

অংশ নিতে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহীনুল আলম, দৈনিক পূর্বকোণ এর সম্পাদক ডা. ম. রমিজ উদ্দীন চৌধুরী, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন, চমেকের সাবেক অধ্যক্ষ, গবেষক অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম তারেকসহ বরেণ্য বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের। ৬৭তম ‘সিএমসি ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এই মিলনমেলা চমেক ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়া সহপাঠীদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রজন্ম (ব্যাচ) এর শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট গ্রুপে ফটোগ্রাফি, আড্ডা, হাসি-ঠাট্টা ও স্মৃতিচারণসহ আনন্দঘন সময় কাটাতে দেখা যায়। অনেকেই অতীত দিনের বন্ধুকে দীর্ঘদিন পর কাছে পেয়ে, সেসব দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। হৈ হুল্লোড়, আড্ডা আর আনন্দ আয়োজনে মেতে থাকা মানুষগুলো একদিনের জন্য যেন হারিয়ে যান মিলনমেলার উচ্ছলতায় ।
বিকেল ৪টায় শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে কেক কাটার মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়। এরপর চলে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠানমালা। এরমধ্যে বরেণ্য চিকিৎসকদের দেয়া হয় সম্মাননা। এরপরই শুরু হয় স্মৃতিচারণ, র‌্যাফেল ড্র, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সম্মাননা প্রদান করা হয় বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন, বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহীনুল আলমকে। সিএমসি ডে-২০২৪ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. ইমরোজ উদ্দিন জানান, সিএমসি ডে’র এই মিলনমেলায় প্রায় ৪ হাজার ৫০০ বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট