স্বৈরাচারী সরকার পালাতে বাধ্য হলেও বিদেশে বসে এখনো ষড়যন্ত্রে অব্যাহত রেখেছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রতিটি ঘরে ঘরে, পাড়া-মহল্লায় স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পাইন্দং ইউনিয়নের বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এই আহ্বান জানান।
পাইন্দং ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি নবীর হোসেন মাসুদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমীর অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফটিকছড়ি থানা আমীর মাস্টার নাজিম উদ্দীন সিকদার, ফটিকছড়ি উপজেলা সাবেক আমীর, মাওলানা নুরুল আলম আজাদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম পূর্ব জেলা সাহিত্য সম্পাদক শহিদুল ইসলাম আজিজী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা অফিস সহকারী এজহার মিয়া, ফটিকছড়ি থানা নায়েবে আমীর এডভোকেট ইসমাইল গণি, থানা সেক্রেটারি ইউসুফ বিন সিরাজ। সম্মেলন আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবির পূর্ব জেলা দাওয়া ও মিডিয়া সম্পাদক সাইরান কাদের চৌধুরী, জি এম ইলিয়াস, এডভোকেট আলমগীর মুহাম্মদ ইউনুস, শ্রমিক নেতা গাজী বেলাল, ছাত্রশিবির পাইন্দং সভাপতি সম্রাট আকবার, ছাত্রশিবির ফটিকছড়ি পৌর সভাপতি নাঈম উদ্দিন প্রমুখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম পূর্ব জেলা সভাপতি রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী, জামায়াত নেতা ইঞ্জিনিয়ার আহসানুল করিম মঞ্জু, শহীদুল্লাহ তালুকদার, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির পাঠাগার সম্পাদক আহম্মদ কবির করিম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাছির কোম্পানি, নাজিম মেম্বার, ফোরকানুর আমীন ও করিম। সঞ্চালক ছিলেন এরশাদুল ইসলাম।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন আরও বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের যে অর্জন, সেই অর্জনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ফসল এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ ব্যাপারে সর্তক ও সজাগ হতে হবে। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের আর কোনো চক্রান্ত এ দেশের জনগণ সফল হতে দেবে না। দেশের পট পরিবর্তনে প্রত্যেক নাগরিকের জীবনে স্বস্তি এসেছে। পরবর্তীতে যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসবেন তারা যেন আগের মতো জালিম না হয়। সবাইকে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সকল ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার মতো একজন খুনির বিদায় হয়েছে। আওয়ামী লীগ এ দেশে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগের অনেককে পরিবারিক কারণে পদ দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতি পরিবারতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল তারা। শুধু এক দলীয় নয়, এক ব্যক্তির দিকে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল পলাতক স্বৈরাচারের।
ফটিকছড়িবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ফটিকছড়ি আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য সকলকে প্রস্তুত হতে হবে। এই লক্ষ্যে প্রতিটি পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে সকল স্তরে ইউনিট গঠন করতে হবে। নীতি আদর্শের ভিত্তিতে কাজ করে যেতে হবে। ফটিকছড়িবাসীর পক্ষে সৎ নেতৃত্ব আপনারা তৈরি করে দিবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, মুখে না পালানোর কথা বললেও নিজের সিদ্ধান্তে দলকে বিপদে ফেলে পালিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এখন বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ বিরোধীদের রুখে দিতে হবে।
তিনি বলেন, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হবে কর্মীদের চরিত্র মাধুর্য ও নেক কর্মতৎপরতার মাধ্যমে। সকলকে আমানতদার হতে হবে এবং সব সময় খেয়ানত থেকে বাঁচতে হবে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে ময়দানের অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে। তাহলে দ্বীনের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ