বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার থেকে ৭০ টাকা দরে এক কেজি পটল কেনেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাসুম খান। এর ঘণ্টা খানেক আগে অফিস থেকে ফেরার পথে নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকার কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারে কাঁচা পণ্যের দাম যাচাই করতে গিয়ে ৬০ টাকা কেজি দরে পণ্যটি বিক্রি হতে দেখেছিলেন। শুধু পটল নয়, কর্ণফুলী মার্কেটে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পাকা মিষ্টি কুমড়া বহদ্দারহাট থেকে কিনেছেন ৪৫ টাকা দিয়ে। অনেকটা একই সময়ে কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে একই মানের একই সবজির দামে এমন তারতম্য দেখে অবাকই হন মাসুম। এদিকে একই সময়ে তার এক সহকর্মী আতুরার ডিপো এলাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে একই মানের পটল কিনেছেন বলে জানতে পারেন তিনি।
পূর্বকোণকে মাসুম জানান, ঠিক একই সবজি, মানও একই, কিন্তু দামটা ভিন্ন। কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে একই সময়ে একই সবজির ভিন্ন দাম অবাক হওয়ার মতো।
মাসুমের দাবির সত্যতা মেলেছে সরেজমিন পরিদর্শনে। গতকাল পাঁচ কিলোমিটারের কম দূরত্বের নগরীর কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজার, বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ও আতুরার ডিপো কাঁচাবাজার ঘুরে একই মানের অন্তত সাতটি সবজি ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিন আতুরার ডিপো বাজারে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া একই মানের পটল কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে ৫০ শতাংশ এবং বহদ্দারহাট বাজারে ৭৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁকরোল বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে ১০ শতাংশ কমে ৯০ টাকা এবং আতুরার ডিপো কাঁচাবাজারে ২০ শতাংশ কমে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তিন বাজারে তিন দাম বরবটি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা মরিচ এবং শসারও।
কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে একই সময়ে একই মানের একই পণ্যের দামের এমন ভিন্নতার বিষয়ে জানতে চাইলে আতুরার ডিপো এলাকার সবজি বিক্রেতা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এলাকা ভেদে দাম ভিন্ন হওয়ার কারণ হতে পারে ব্যয় আর বা মান। কোনো কোনো এলাকায় পরিবহন ও দোকান খরচ বেশি পড়ে, সেখানে দাম বেশি হতে পারে। আবার উত্তরবঙ্গ থেকে আসা সবজির দাম স্থানীয় সবজির চেয়ে কম, এটাও একটা কারণ হতে পারে।’
অন্যান্য সবজির মধ্যে বৃহস্পতিবার আলু ৫৩-৫৫, চিচিঙ্গা ৬০-৭০, ঝিঙে ৬০-৭০, বেগুন ৮০-১০০, টমেটো ১০০ এবং পেঁপে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে নগরে। এদিকে খুচরায় ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম। নগরে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১১৫, রসুন ২১০ এবং আদা ২২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম আরও ১০ টাকা বেড়েছে। এদিন ব্রয়লার মুরগি ১৮০, সোনালি মুরগি ২৮০ এবং দেশি মুরগি ৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের দাম। নগরে গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আকারভেদে রুই ২৮০ থেকে ৪০০, কাতলা ৩৬০ থেকে ৪০০, মৃগেল ২২০-২৬০, আকার ভেদে পাঙাস ১৮০-২২০, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, স্যালমন ফিশ ৪৫০, বাগদা চিংড়ি ৮০০, রূপচাঁদা জাত ও আকার ভেদে ৬০০ থেকে ৮০০, পোয়া মাছ ২৫০, পাবদা ৪০০, সুরমা ৩৫০ থেকে ৫৫০, টেংরা ৩৭০ এবং নারকেলি মাছ ২৬০ টাকা এবং কৈ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
পূর্বকোণ/এএইচ