চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

৯ জনকে আসামি করে মামলা

কর্ণফুলীতে যৌথ বাহিনীর তল্লাশির নামে ডাকাতিকালে আটক চার

কর্ণফুলী সংবাদদাতা

৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

কর্ণফুলীতে যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে একটি এতিমখানায় ডাকাতির চেষ্টাকালে চারজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের আলত্বাফিয়া ইয়াছিনিয়া আল এজাজ ইন্টারন্যাশনাল হেফজ ও এতিমখানায় এই ঘটনা ঘটে।

 

ডাকাতির চেষ্টাকালে আটক চারজন হলেন- সুহেল আনোয়ার (৪০), বিদ্যুৎ দেব (৩৫), মো. শফিকুল ইসলাম (৪৮) ও সুমন কান্তি দে (৪০)। এরমধ্যে সুহেল আনোয়ার নিজেকে সেনা সদস্য এবং শফিকুল ইসলাম নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসেবে পুলিশের কাছে পরিচয় দিয়েছেন।

 

পরে শুক্রবার দুপুরে এই ৪ জনসহ মোট ৯ জনকে আসামি করে কর্ণফুলী থানায় একটি মামলা করেছেন এতিমখানার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইসহাক। মামলার আসামিরা হলেন, পেকুয়ার জামাল হোসেনের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম, বাঁশখালীর বিধান দেবের ছেলে বিদ্যুৎ দেব, জামালপুরের আজহারুল ইসলামের ছেলে সুহেল আনোয়ার, ভূজপুরের দুলাল বাবুর ছেলে সুমন কান্তি দে, সীতাকুণ্ডের জামাল, চন্দনাইশের আব্দুল মনজুরের ছেলে রাকিব আল হোসেন শিমুল, চকরিয়ার সুজিত কান্তি দে’র ছেলে দুলাল কান্তি দে, বাকলিয়ার জালাল আহমেদের ছেলে আব্দুল ছাত্তার টিটু এবং চান্দগাঁওয়ের মো. শাহাবুদ্দিন। এছাড়া আরও ২-৩ জনকে মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে রাখা হয়েছে।

 

এদিকে শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ জুয়েল দেবের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের হাতে আটক শফিকুল ইসলাম ও বিদ্যুৎ কান্তি দেব। সুহেল ও শফিকুলের পরিকল্পনাতেই ডাকাতি সংঘটিত হয় বলে তারা আদালতে স্বীকার করেন।

 

মামলার বিবরণে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে একটি মাইক্রোবাসে আট-দশ জন ব্যক্তি এসে যৌথ বাহিনীর গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে আলত্বাফিয়া ইয়াছিনিয়া আল এজাজ ইন্টারন্যাশনাল হেফজ ও এতিমখানায় প্রবেশ করেন। এ সময় দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী এবং মাদ্রাসার কর্মকর্তারা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে ওয়াকিটকি হাতে নিয়ে শফিকুল বলেন, এজাজ হুজুরের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে এবং উপরের নির্দেশে যৌথবাহিনীর সদস্যরা এখানে তল্লাশি চালাতে এসেছেন। তারা ভেতরে ঢুকবেন। এ সময় কেউ নড়াচড়া করলে গুলি করা হবে বলে হুমকি দেন তিনি।

 

পরে টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত ডাকাত বলে মাদ্রাসার ছাত্র ও দারোয়ান চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে সুহেল আনোয়ার, বিদ্যুৎ দেব, মো. শফিকুল ইসলাম ও সুমন কান্তিকে আটক করে ফেলে। পরবর্তীতে টহলরত আর্মি ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হেফাজতে নেয়।

 

আলত্বাফিয়া ইয়াছিনিয়া আল এজাজ ইন্টারন্যাশাল হেফজ ও এতিমখানার পরিচালক আল এজাজ বলেন, যৌথবাহিনী পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি মাদ্রাসায় লুটপাট চালিয়ে নগদ তিন লাখ ক্যাশ এবং তিনলাখ টাকা সমমূল্যের দিরহাম ও রিয়াল নিয়ে পালিয়ে যান। আমরা থানায় মামলা করেছি।

 

জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার ওসি জহির হোসেন বলেন, শুক্রবার বিকেলে আটক আসামিদের আদালতে পাঠানো হলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

 

পূর্বকোণ/নয়ন/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট