প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসের ফলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ ও মৎস্য আহরণ বিপণন কেন্দ্রে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই মৎস্য বিপণন কেন্দ্রের প্রধান মো. জসিম উদ্দীন।
রবিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে মৎস্য আহরণ শুরু হলেও কাপ্তাই উপজেলায় একটি আঞ্চলিক সংগঠনের অতিরিক্ত চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে মৎস্য আহরণ বন্ধ রেখেছিল কাপ্তাইর জেলেরা। তবে সোমবার থেকে মৎস্য আহরণ ও বিপণন কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কাপ্তাই মৎস্য বিপণন কেন্দ্রের এই কর্মকর্তা।
কয়েকজন জেলে জানান, এখনো কাপ্তাই হ্রদের কয়েকটি স্থানে মৎস্য আহরণ করতে যেতে তারা সাহস পাচ্ছে না। বিশেষ করে কিছু কিছু স্থানে নিরাপদে থেকে তারা মৎস্য আহরণ করছে। পরিস্থিতি একদম পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে তবেই তাদের সবার মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে জানান।
কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বেলাল হোসেন ও সম্পাদক নবী হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, প্রশাসনিক বিভিন্ন আশ্বাস ও সার্বিক সহযোগিতার ফলে আমরা পুনরায় মাছ শিকার ও আহরণ করছি।
কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে কেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে কয়েকজন জেলে জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার কাপ্তাই হ্রদের আইড় মাছের আহরণ ও আকার বেড়েছে। তবে বিশেষ করে কেচকি ও চাপিলা মাছ ছোট পাওয়া যাচ্ছে। অন্য বছরের চেয়ে এবার কাপ্তাই হ্রদে পানি অনেকটা বেশি। যে কারণে জেলেরা যেসব জায়গায় জাল ফেলে থাকেন সেখানে ওই পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টিপাত ও ঢলের কারণে হ্রদের পানি ঘোলা হওয়ার কারণে মাছ পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে বড় হতে পারেনি।
প্রতি বছরের পহেলা মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজণন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময়ে হ্রদের মাছ বিপণনসহ স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ রাখা হয়। তবে চলতি বছর নির্ধারিত সময়ের ছয়দিন আগে ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও হ্রদে পানি পর্যাপ্ত না বাড়ায় প্রথম দফায় ১৫ ও দ্বিতীয় দফায় ২৩ দিন হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়। নির্ধারিত তিন মাস সময়ের পর আরও একমাস সাত দিন পর শুরু হল কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার।
পূর্বকোণ/কবির/জেইউ/পারভেজ