২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি হাসান নূরী আওয়ামী লীগের হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রিয় মাতৃভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিভিন্ন সময় মাতৃভূমির টানে এলাকায় আসতে চাইলেও পুনরায় হামলা ও মামলার শিকার হয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক শরীফ প্রায় ডজনখানেক মামলার আসামি করেন হাসান নূরীকে। যার ফলশ্রুতিতে তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হন।
৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর হাসান নূরী দেশে ফেরার আবেদন করেন সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসে। সবকিছু ঠিক করে গত মাসের ২৮ আগস্ট দেশে ফিরেন এই যুবদল নেতা। পরে শনিবার (৩১ আগস্ট) প্রিয় মাতৃভূমি কালারমারছড়ায় পা রাখেন ইউনিয়ন যুবদল নেতা। এ সময় শত শত জনতা তাকে দেখতে রাস্তার দু পাশে ভীড় করেন। যুবদল নেতা হাসান নূরী গাড়ি থেকে নামতেই কালারমারছড়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।
তিনি কালারমারছড়া বাজারে স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং কালারমারছড়া বাজারের ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দীর্ঘদিন আপনারা শোষণ-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে সেই শোষণ, বঞ্চনা ও নির্যাতনের দিন শেষ হয়েছে। আমি জেনেছি, আপনারা দীর্ঘদিন যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে বাধ্য হয়েছেন। নতুন বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতায় আপনারাও স্বাধীনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন। কাউকে এখন থেকে আর চাঁদা দিতে হবে না। কালারমারছড়ায় কোনো চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না। যদি কোনো সন্ত্রাসী কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায় তাহলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ তানভীর সিদ্দিকীর কবর জেয়ারত করেন। এরপর যুবদল নেতা হাসান নূরী তানভীর সিদ্দিকীর পৈতৃক ভিটা পরিদর্শন করেন। যেখানে ২০১২ সালে স্থানীয় মাফিয়া চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক শরীফ ও তার সশস্ত্র ক্যাডারেরা ২০০টিরও বেশি বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল।
পরে তিনি কালারমারছড়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ শাহঘোনা গ্রামের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বৈঠক করেন হাসান নূরী। এ সময় তিনি সবাইকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত, শান্ত, সমৃদ্ধ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভূমিকা রাখার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।
এ সময় যুবদল নেতা ইকবাল, তমজিদ, দিদার, ছাত্রনেতা সৌরভ খান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোহাম্মদ বেলাল, শ্রমিকদল নেতা মোহাম্মদ মানিকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বকোণ/এরফান/জেইউ/এএইচ