দাবি আদায়ের নামে সরকারকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক ঐক্য। সংগঠনটি এমন কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সোমবার (২৬ আগস্ট) চবির নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক ঐক্যের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ফেনী নোয়াখালী অঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে সকল মানুষ যখন নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন, তখন ফ্যাসিবাদের দোসররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিপাকে ফেলতে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে খুনি হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করার ফলে ছাত্র আন্দোলনের যে প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেটিকে প্রতিহত করতে এবং বিজয়ের সুফলকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হিসাবে দাবি আদায়ের নামে বিভিন্ন সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ভয়ংকর সব ষড়যন্ত্রে মেতেছে। কলেজ ছাত্রদেরকে সচিবালয়ে ঢুকিয়ে পরীক্ষা বন্ধ করার চেষ্টা সফল করেছে, সবশেষ গতকাল সচিবালয়ে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের জিম্মি করেছে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপর উপর্যুপরি হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর আহত করেছে। এরইমধ্যে আজকে আবার শাহবাগে রিকশাচালকরা ইঞ্জিনচালিত রিকশা বন্ধের আন্দোলনে নেমেছে এবং আগামীকাল থেকে পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি এবং বিআরই’র চাকরীজীবীরা গণছুটির ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক ঐক্য এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। দাবি আদায়ের নামে বাংলোদেশে সফল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী স্থিতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করার এহেন প্রচেষ্টাকে শিক্ষক ঐক্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আনসার সদস্যদের অন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ যখন জাতিকে নতুন বাংলাদেশ তৈরির স্বপ্ন দেখিয়েছে, তখন সুবিধাবাদীদের এহেন চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র জাতি কোন অবস্থাতেই বরদাশত করতে পারে না। এ জাতীয় হীন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে বিপ্লবী জনতা সোচ্চার এবং সজাগ থেকে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেবে এবং বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়েনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।
এ বিষয়ে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান বলেন, ইন্টারিম গভর্নমেন্টকে সময় দিতে হবে। সরকার গঠনের এখনো ১ মাস হয়নি। যারা ১৬ বছর অপেক্ষা করতে পেরেছে তারা এখন কিছুদিন অপেক্ষা করতে পারছে না কেন? যারা এখন এখন দাবির নামে সরকারকে অস্থিতিশীল করছে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। এমনকি তারা সহিংসতার ঘটনাও ঘটিয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সকলের দাবিগুলো আপাতত বন্ধ থাকুক। নতুন সরকারকে কাজ করতে সময় দিতে হবে।
বিবৃতিদাতা শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান দর্শন, আধুনিক ভাষার অধ্যাপক ইব্রাহিম হোসেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী, ইন্সটিটিউট অব ফরেস্ট্রির অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন, ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ড. নেছারুল করিমসহ ৭৫ জনের অধিক শিক্ষক।
পূর্বকোণ/জুনায়েদ/জেইউ/পারভেজ