চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাসাকাদজা ও মাদান্দের ৭৫ রানের জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানের পুঁজি গড়ে সিকান্দার রাজার দল। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ ওভার ২ বলে ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।
মাত্র ৪১ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশেরও। দ্বিতীয় ওভারেই ১ রান করা লিটন দাসকে ফেরান মুজারাবানি। তার ইনসুইঙ্গার লিটনের ব্যাট-প্যাডের ফাক দিয়ে স্টাম্পে লাগলে ফিরতে হয় লিটনকে। ৫ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
লিটন ফিরলে অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে জুটি গড়েন তামিম। দুই ব্যাটারের ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে ৫০ পেরোয় বাংলাদেশ। এই জুটি পূর্ণ করে হাফ সেঞ্চুরিও। ৫২ রানের জুটি ভাঙে শান্ত ফিরলে। ২৪ বলে ২১ রান করা শান্তকে ফেরান জংয়ে।
শান্ত ফিরলেও আর বিপদ হতে দেননি তামিম-হৃদয় জুটি। ৩ বার জীবন পাওয়া তামিম দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতেই রেখেছেন। অভিষেকেই ফিফটি তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন তামিম। জুনায়েদ সিদ্দিকির পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে টি-২০র অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরি পেলেন তামিম। তার সাথে দারুণ ব্যাটিং করেছেন তাওহিদ হৃদয়ও।
তামিম-হৃদয় জুটি তুলেছে ৬৯ রান। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থেকেই জয় ছিনিয়ে আনেন তামিম। অন্য প্রান্তে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ বলে ৩৩ রান করে নট আউট থাকেন হৃদয়ও। ৪ ওভার ৪ বল বাকি থাকতেই দারুণ এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন জিম্বাবুয়ানরা। শরিফুল ইসলামকে ইনিংসের প্রথম বলেই চার হাঁকান জিম্বাবুয়ান ওপেনার জয়লর্ড গুম্বি।
৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৬ রান তুলে ফেলেছিলেন সফরকারীরা। কিন্তু এরপর যেন মরক লাগল জিম্বাবুয়ের ইনিংসে! শেখ মাহেদির স্পিন ও তাসকিন আহমেদের পেসে ভেঙে পরে জিম্বাবুয়ের টপ ও মিডল অর্ডার। মাহেদি পরপর দুই বলে নেন দুই উইকেট। পরের ওভারে পেসার তাসকিন আহমেদও পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন। ১ উইকেটে ৩৬ থেকে মুহূর্তেই ৬ উইকেটে ৩৮ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে!
খানিক বাদে লুক জংয়ে সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হলে মনে হচ্ছিল অল্পতেই বুঝি আটকে যাচ্ছে সিকান্দার রাজার দল। লুক জংয়ে যখন সপ্তম ব্যাটার হিসেবে ফিরলেন জিম্বাবুয়ের রান তখন মাত্র ৪১! তবে এরপর ওয়েলিংটন মাদাকাদজাকে নিয়ে ক্লাইভ মাদান্দে ঘুরে দাঁড়ালেন দারুণভাবে।
দুজনের কেউই অবশ্য শুরুতে রানের চিন্তা করেননি। উইকেটে স্রেফ পরে থাকতে চেয়েছেন। শেষ দিকে এসে দ্রুত রান তুলতে চেয়েছেন। তাতে খুব বড় রান করতে না পারলেও জিম্বাবুয়ে একশ পেরিয়ে গেল এই দুজনের ব্যাটেই। শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে থেমেছে ১২৪ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও সাইফউদ্দিন। তাসকিন ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ৪ ওভারে ১৬ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন স্পিনার শেখ মাহেদি হাসান।
পূর্বকোণ/জেইউ