
ঈদুল ফিতরের আগের দিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আকাশপথে আসার পরিকল্পনা করেন বেসরকারি চাকরিজীবী তারিফ হাসান। এজন্য বিমানের টিকেট কাটতে যোগাযোগ করেন একটি এজেন্সির সঙ্গে। কিন্তু বুকিং দিতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে বেসরকারি এ চাকরিজীবীর। কারণ- অন্যান্য সময়ে এ রুটে যে টিকেট মূল্য ছিল ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা, এখন তা ১০ হাজারে পৌঁছেছে।
তারিফ হাসান বলেন, সড়ক পথের যানজট আর দীর্ঘ সময় থেকে বাঁচতে বিমান পথেই যাতায়াতে স্বাদচ্ছন্দবোধ করে পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু টিকেট মূল্য দ্বিগুণের বেশি। তবুও বাধ্য হয়ে টিকেট বুকিং দিতে হলো।
শুধু তারিফ হাসান নন, সড়কপথে যানজট, রেলপথে বিলম্বিত যাত্রাসহ নানা দুর্ভোগ এড়িয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের জন্য আকাশপথকে বেছে নেন ঈদে ঘরমুখী মানুষ। আবার সময় বাঁচাতেও যাতায়াত করেন অনেকেই। কিন্তু অন্যান্য সময়ে সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও ঈদের আগে এবং পরে বিমানের টিকিট যেন সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যাত্রীদের কাছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে- দেশের আকাশে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চারটি এয়ারলাইন্স। সেগুলো হচ্ছে- রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও এয়ারএস্ট্রা। ঢাকা-চট্টগ্রাম-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে প্রতিদিন আলোচ্য বিমানের ফ্লাইট পরিচালিত হয়ে থাকে। যাদের অন্যান্য দিনে ভাড়া থাকে ৩ হাজার ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে চার হাজার টাকা।
যাত্রী ও সেবা প্রদানকারী এজেন্সিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- অভ্যন্তরীণ আকাশ পথের বিমানের টিকেট আগেই অনেকেই বুকিং দিয়েছেন। যে কয়েকটি টিকেট রয়েছে, তাও বিক্রি হচ্ছে অন্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি মূল্যে। বর্তমানে বিমানভেদে টিকেট কাটতে হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্স অব বাংলাদেশ (আটাব) চট্টগ্রাম জোনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, ‘অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের টিকেটের চাহিদা কয়েকগুণ বেশি থাকলেও ফ্লাইট থাকে কম। ঈদে যেহেতু চাহিদা বেশি থাকে তাই বিমান সংশ্লিষ্টদের উচিত অন্তত ঈদের আগে ও পরের কয়েকদিন ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর। কেননা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করতে সিভিল এভিয়েশন ছাড়া আর কারও অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। এতে করে বিমান কর্তৃপক্ষ যেমন লাভবান হবে, তেমনি যাত্রীরাও স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন।”
চট্টগ্রাম এভিয়েশন ক্লাবের সভাপতি আসিফ চৌধুরী বলেন, ‘অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদে পরিবহন ব্যবস্থা সংকটে থাকে, তখন সামর্থ্যবান মানুষেরা বিমানে যাতায়াত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু অভ্যান্তরীণ রুটে বিমান ভাড়া বেশি হওয়া কাম্য নয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বিবেচনা করা উচিত।’
পূর্বকোণ/এসএ