কক্সবাজারের চকরিয়ায় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাময়িক বহিষ্কৃত সভাপতি জাফর আলমের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরের পূর্বে রাত ১১টা ৫০মিনিটে অনুষ্ঠান সঞ্চালক রাজিবের কাছ থেকে স্পিকার কেড়ে নিয়ে শহীদ মিনারে আধিপত্য নিজের দখলে নেন। এ সময় শহীদ মিনার ও মাঠে উপস্থিত সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে চকরিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান।
এর আগে থেকে চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার রাকিব উর রাজা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলীসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য অবস্থান করছিলেন।
এদিকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে চকরিয়া প্রেস ক্লাবে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করেন।
এতে তারা অভিযোগ করে বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বিতর্কিত করতে সাবেক এমপি জাফর আলম শহীদ বেদিতে বিশৃঙ্খলা করেন। শহীদ বেদিতে তারা দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও কালো রংয়ের গাড়িতে করে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে গেছেন। বর্তমান এমপি সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দিয়েছেন। প্রশাসন ও পুলিশের সামনে অস্ত্র নিয়ে শহীদ বেদীতে উঠে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। জাফর আলম ও তার বাহিনীর হাতে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও তার ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে সাবেক এমপি ও তার অনুসারীরা এ ধরনের আচরণ না করলেও পারতেন। শহীদ মিনারে মাইক্রোফোন কেড়ে নেয়া উচিত হয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অস্ত্র নিয়ে কেউ গিয়েছে কি না আমার জানা নেই, নজরেও পড়নি।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার -১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের এমপি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, তারা হঠাৎ এসে জুতা পায়ে শহিদ মিনারে উঠে পড়লেন। সঞ্চালকের হাত থেকে স্পিকার কেড়ে নিয়ে মঞ্চ দখলে নিলেন। এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। প্রথম প্রহরে ঘটা বিস্তারিত ঘটনা আমি রাতেই কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। বলেছি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।
পূর্বকোণ/জাহেদ/জেইউ/পারভেজ