চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে মাস ট্রান্সপোর্টের দিকে যাচ্ছি

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১২:১৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে বিআরটিএ মাস ট্রান্সপোর্টের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী। পূর্বকোণের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। আলাপচারিতায় নগরীর গণপরিবহন ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন এই বিআরটিএ কর্মকর্তা। যার পুরোটায় পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

 

পূর্বকোণ: কোম্পানিভিত্তিক বাস সার্ভিস হচ্ছে না কেন?

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: কোম্পানিভিত্তিক বাস ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি আমাদের একটি সভা হয়েছে, ওই সভায় এবি ট্রাভেলস এবং চট্টলা চাকা নামে দুইটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোম্পানিভিত্তিক বাস সার্ভিসে কেউ আসলে আমরা তাদের স্বাগত জানাব।

পূর্বকোণ: মাঝে মাঝে বাস জরিপ করা হয়, এটা কী উদ্দেশ্যে করা হয়, এর বাস্তবায়ন কি হয়?

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: কোনো রুটে নতুন বাস চালুর জন্য আবেদন আসলে তখন ওই রুটে যত বাসের পারমিট থাকে, তত বাস চলে কিনা- সেটা যাচাই করার জন্য বাস জরিপ করা হয়। দেখা যায়, একটি রুটে ২০টি বাস চলাচলের পারমিট আছে। দুই-তিন বছর পর সেখান থেকে কয়েকটি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। এদিকে কেউ আবার নতুন করে পাঁচটি বাস চালুর আবেদন করল। এসব সমন্বয় করার জন্য বাস জরিপ করা হয়।

 

পূর্বকোণ: চট্টগ্রাম অনেকটা ছোট গণপরিবহনের শহর হয়ে গেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে গণপরিবহন ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আপনাদের পরিকল্পনা কী?

 

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: এটা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার জন্য আমরা মাস ট্রান্সপোর্টের দিকে যাচ্ছি। মাস ট্রান্সপোর্ট বলতে বাস। তিনটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা একটা বাসের সমান জায়গা নেয়। কিন্তু তিনটি সিএনজি অটোরিক্সা যাত্রী বহন করে ৯ জন। কিন্তু একটি বাস ৩০ জন পর্যন্ত যাত্রী বহন করতে পারে। সেজন্য আমরা মাস ট্রান্সপোর্টের দিকে যাচ্ছি। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কোম্পানিভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে।

 

পূর্বকোণ: মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড় ঝক্কর বাস দিয়ে চলছে নগর গণপরিবহন, এসব বন্ধ করা হচ্ছে না কেন?

 

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এটি তদারকি করছেন। কিন্তু আমাদের তো আর প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে রাস্তায় থাকা সম্ভব না। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন, তারা প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এগুলোর বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।

 

পূর্বকোণ: বাসের অনেক রুট বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আবার নির্দিষ্ট রুটে যত গাড়ির সিলিং আছে ওই রুটে তত বাস নেই। অনেকে রুট পরিবর্তন করে মর্জি মাফিক রুটে গাড়ি চলাচ্ছে- এটা রোধে করণীয় কী?

 

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: জরিপে তো এ বিষয়গুলো উঠে আসছে। এগুলো আমাদের আরটিসি মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এই জন্যই মূলত জরিপটা দরকার। আমরা জরিপ করে যদি দেখি যে এই রুটে কোনো গাড়ি চলে কিনা, যদি দেখা যায় আসলে রুটটা ডেথ, তাহলে আমরা বাতিল করে দিই। আর রুট পরিবর্তনের বিষয়টিও ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায়। কেউ যদি রুট পরিবর্তন করে, ভ্রাম্যমাণ আদালত যদি দেখে যে সে রুট পরিবর্তন করছে, তাহলে তাকে জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে যারা আছেন তারা বিষয়গুলো দেখছেন।

 

পূর্বকোণ: নিয়মিত আরটিসির বৈঠক হচ্ছে না। যে কারণে অনেক সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে। নিয়মিত বৈঠক না হওয়ার কারণ কী?

 

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: আরটিসির মিটিং হয়, মোটামুটি নিয়মিতই হয়। তিন-চার মাস পর পর মিটিংগুলো হয়।

 

পূর্বকোণ: বাস মালিকদের অভিযোগ বিভিন্ন রুটের বাসগুলো যাত্রী পাচ্ছে না ছোট গণপরিবহনের জন্য। টেম্পুগুলো একটি রুটকে ভেঙে কয়েকটি রুটে ভাগ হয়ে চলাচল করছে। আপনাদের পদক্ষেপ কি?

 

সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী: বাস মালিকরাই তো নতুন পারমিটের জন্য আবেদন করেন। এখন ওরা যদি যাত্রী না পায় তাহলে নতুন বাসের আবেদন কেন করবে। আর তারা যদি ব্যবসায় লোকসান করে, তাহলে তো ব্যবসা করত না। তাদের বিষয়ে তো আমি বলতে পারব না।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট