চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তর ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হবার ছিল ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে, এরমধ্যে কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল ডিসেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। নির্মাণকাজ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় যথাসময়ে টাকা ছাড় না হওয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছে। এমজেসিএল এবং ডিইসিএল নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ভবনটির নির্মাণ কাজ করছে। বাংলাদেশ পুলিশের রাজস্ব বাজেট থেকে ৪৬ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২২ তলা সিএমপি সদর দপ্তর ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (এস্টেট এন্ড ডেভলেপমেন্ট) এস এম মোস্তাইন হোসাইন জানান, নির্মাণ কাজটি রাজস্ব ফান্ডের। যথাসময়ে টাকা ছাড় না হওয়ায় কাজটি মন্থর গতিতে চলছে। টাকা ছাড় হলেই শুরু হবে নির্মাণ কাজ।
১৯৭৮ সালের ৩০ নভেম্বর সিএমপির যাত্রা শুরু হয়। নগরীর লালদিঘি মাঠের পাশে জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন একটি উঁচু টিলায় প্রতিষ্ঠা করা হয় সিএমপি কার্যালয়। এর আাগে সেই পাহাড়ে ছিল ডিআইজির অফিস। সিএমপি কার্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ডিআইজি অফিস নিয়ে যাওয়া হয় খুলশীতে। তবে সেই পাহাড়ে রয়ে যায় জেলা প্রশাসনের রেকর্ড রুম। পরবর্তীতে নামেমাত্র মূল্যে পাহাড়টি মালিকানা দেয়া হয় সিএমপিকে। নির্মাণকাজ শুরু হলে ২০২০ সালে সিএমপি সদরদপ্তর নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে স্থানান্তর করে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সিএমপির ২২ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর। ব্যয় ধরা হয় ৪৬ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। রাজস্ব বাজেট থেকে ভবনটির পুরো নির্মাণ ব্যয় করার কথা। কথা ছিলো কার্যাদেশ পাবার পরবর্তী ১৮ মাসের মধ্যে ২৪ হাজার বর্গফুট জমির উপর নির্মিত ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ করার। সেই অনুযায়ী চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শেষ হয় কাজের মেয়াদকাল। কিন্তু তিন বছর পার হয়ে গেলেও কাজ হয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ। সিএমপির ২২ তলা ভবনটির নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধান করছেন চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ।
জানতে চাইলে গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ জানান, ভবনটির নির্মাণ কাজের অর্থায়ন হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের রাজস্ব বাজেট থেকে। প্রথমে কথা ছিল ভবনটি ২২ তলা হবে। ফান্ড সংকট হলে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দেয়। এরমধ্যে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ফান্ড ছাড় না হওয়ায় পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আট তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ফান্ড মেলেনি। তবে ঠিকাদার যা বিল পেয়েছে তা খুবই অপ্রতুল। যথাসময়ে নিয়ম অনুযায়ী বিল না পাওয়ায় ঠিকাদার নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে। বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরও জানে। ছয়মাস পর পর কাজের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। ফান্ড ছাড় হলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। গতকাল সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। সবেমাত্র ভবনের ফাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। জানা যায়, চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় আর্থিক সংকটে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদার। যার কারণে যথাসময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে বেড়ে গেছে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য। এরমধ্যে পেরিয়ে গেছে তিন বছর।
পূর্বকোণ/এসি