চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

২০২৪ শিক্ষবর্ষে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি

ভর্তির সুযোগ পেয়েও আসন হাতছাড়া ২০ শিক্ষার্থীর

ইমরান বিন ছবুর

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ১২:২২ অপরাহ্ণ

নগরীর ১০ সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মেধা তালিকায় মনোনীত হওয়ার পর ২০ শিক্ষার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। মিথ্যা তথ্য ও ভিন্ন ভিন্ন নামের জন্মনিবন্ধন দিয়ে আবেদন করে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া এই ২০ শিক্ষার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষক। নগরীর ১০ সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে চারটি বিদ্যালয়ের এই ২০ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়। অন্য ছয়টি বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়নি বলে সেসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিশ্চিত করেছেন।

 

একজন শিক্ষার্থী স্কুলে ভর্তির জন্য অনলাইনে একটি আবেদনের মাধ্যমে পাঁচটি বিদ্যালয় পছন্দক্রম দিতে পারবে। ভর্তি নীতিমালায় এমন নির্দেশনা থাকলেও কোন কোন অভিভাবক শিক্ষার্থীর নাম পরিবর্তন করে ভিন্ন ভিন্ন জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে একাধিক আবেদন করে। এসব শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ একাধিক স্কুলে ভর্তির জন্য লটারিতে মনোনীতও হয়েছে। এমন একাধিক স্কুলে আবেদনকারী এবং একাধিক স্কুলে ভর্তির জন্য মনোনীত হওয়া সব শিক্ষার্থীর আবেদন এবং ভর্তি বাতিল করার জন্য বিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এই নির্দেশনা মতে একাধিক আবেদনের মাধ্যমে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ২০ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়েছে।

 

যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে: সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ জন, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ৭ জন, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ জন এবং নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়। অন্যদিকে, ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গভ. মুসলিম হাই স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একাধিক আবেদনের কোন তথ্য পাওয়া না যাওয়ায় সেসব স্কুলের কোন ভর্তি বাতিল করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধানগণ।

 

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা আমরা বারবার চেক করেছি। ভর্তি নীতিমালার বাইরে গিয়ে একাধিক আবেদনের মাধ্যমে সুযোগ পাওয়া ৭ শিক্ষার্থীর তথ্য আমরা পেয়েছি। অধিদপ্তরের নির্দেশনা মতে এই ৭ শিক্ষার্থীদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের মত গত বছরও ১৭ জন শিক্ষার্থী একাধিক আবেদনের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। গত বছর সেসব শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়েছে।

 

সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহেদুল ইসলাম খান বলেন, মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা চেক করার পর একাধিক আবেদনের মাধ্যমে সুুযোগ পাওয়া ৮ শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম নগরীর ১০ সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতবছর ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে মিথ্যা তথ্য ও ভিন্ন ভিন্ন নামের জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ পাওয়া প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়। ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা একাধিক জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে দুই বা তিন ধাপে আবেদন করেছে। তবে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, একজন শিক্ষার্থী সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে একটি আবেদনে ৫টি বিদ্যালয় পছন্দক্রম দিতে পারবে।

 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোন আবেদনকারী তথ্য পরিবর্তন করে একাধিকবার আবেদন করে থাকলে ডিজিটাল লটারিতে তার ভর্তির নির্বাচন বাতিল বলে গণ্য হবে। মিথ্যা তথ্য প্রদান করে কোন শিক্ষার্থী লটারিতে নির্বাচিত হয়ে থাকলে যাচাই বাছাই করে ওই শিক্ষার্থীকে ভর্তি না করানোর নির্দেশ দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) ও ঢাকা মহানগরী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মো. আজিজ উদ্দিন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট