আগামী ৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের রোডমার্চ থেকে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। অপরদিকে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করলে রুখে দাঁড়াবে আওয়ামী লীগ। দুই প্রধান দলের এমনই পাল্টাপাল্টি ঘোষণায় সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, দেশের রাজনীতিতে ততই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। মূলত চলতি অক্টোবর মাসেই নির্ধারিত হবে রাজনীতির সব রকমের ফয়সালা।
নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিরোধীদলের আন্দোলন মোকাবেলায় পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। অপরদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধীদল বিএনপি একদফা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে দলটি কঠোর আন্দোলনের পথে হাঁটছে। তবে এ মুহূর্তে প্রধান দুই দল কোন ধরনের সমঝোতার পথে না হাঁটায় উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে দেশের জনগণ।
আন্দোলনের ভবিষ্যত কর্মসূচি কি এমনই এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, বিএনপির এখন অন্য কোনো ভাবনা নেই। দলটির সব মনোযোগ এখন সরকার পতনের একদফা দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকেই। দাবি আদায়ের পর নির্বাচন নিয়ে ভাবতে চায় দলটি। তাই প্রথম ধাপের চলমান রোডমার্চ ও সমাবেশের টানা কর্মসূচি সফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেতারা। আগামী ৫ অক্টোবর টানা কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রাম থেকেই কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান, ঢাকা ঘেরাও, নির্বাচন কমিশন, সংসদ ভবন, সচিবালয় ও গণভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
বিএনপির এমনই বক্তব্যের জবাবে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা-সমাবেশ, গণমিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ। সংবিধান অনুযায়ী দেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের আইন মতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে। বিএনপিরও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। তবে আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে তা রুখে দাঁড়াবে আওয়ামী লীগ।’
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিকরা সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনে অনড়। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি রোডমার্চসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগও। দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা বিএনপির কর্মসূচির প্রতি নজর রেখে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে মাঠের রাজনীতি সরব রাখলেও চলমান সংকট থেকে উত্তরণ কোন পথে, তা বলছে না কোনো পক্ষই। এমনকি কোনো পক্ষ থেকেই সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোন দিকে যাবে, তা অক্টোবরেই নির্ধারিত হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
পূর্বকোণ/আরডি