চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রামে পাঁচ বছরে বেড়েছে জন্মহার

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে গত পাঁচ বছরে বেড়েছে জন্মহার। জন্মহারের প্রবণতা শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলেই বেশি।

 

২০২২ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গড়ে জন্মহার বেড়ে হয়েছে দুই দশমিক ছয়। যা ২০১৭ সালের পূর্বে ছিল দুই দশমিক পাঁচ। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভিসের (বিডিএইচএস) তথ্য অনুযায়ী একজন নারী পাঁচ বছরে তিন থেকে চারজন সন্তান জন্ম দিচ্ছেন।

 

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় জানায়, বিগত বছরগুলোয় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসে সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু করোনা মহামারি শুরু হলে স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ জনগণের নাগালের বাইরে চলে যায়। এ কারণে করোনার প্রভাব কমে গেলেও সে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

 

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবুল কালাম বলেন, এ সমস্যা সমাধানে সরকারের চলমান উদ্যোগগুলোর পাশাপাশি আরও কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জনবল সংকট নিরসনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শতাধিত কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোভিডের কারণে বন্ধ থাকা সেবাগুলো পুনরায় চালু হয়েছে। যেমন- বিনামূল্যে তিনমাস মেয়াদি ইনজেকশন প্রদান, খাবার বড়ি দেয়া ও নামমাত্র ১০ পয়সায় কনডম বিতরণ করা হচ্ছে। জন্মনিয়ন্ত্রণে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের অংশগ্রহণ বাড়াতে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে গ্রামাঞ্চলগুলোতে। আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোতে দম্পতিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

 

জন্মহার বাড়ার কারণ : পাঁচটি কারণে চট্টগ্রামে বেড়েছে জন্মহার। জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জন্মহার বাড়ার কারণ করোনায় পর্যাপ্ত সেবা দেয়া সম্ভব হয়নি তৃণমূল পর্যায়ে। এ সময় জনবল সংকট থাকায় সবার দ্বারে দ্বারে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি। জন্মনিয়ন্ত্রণে কাজ করা এনজিও সংস্থাগুলোও কোভিডের কারণে ফান্ড সংকটে পড়ে যায়। যে কারণে তারাও পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারেনি।

 

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি শুধুমাত্র নারীদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় এবং পুরুষের অংশগ্রহণ এতে কম থাকে। এছাড়া অতীত থেকেই একটি বড় সমস্যা ছিল ধর্মীয় অনুভূতি। যা এখনও অনেকের মাঝে বিদ্যমান রয়েছে। এসব কারণে ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামে অপ্রতাশিত জন্মহার বেড়েছে।

 

আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি : অস্থায়ী পদ্ধতি (দীর্ঘমেয়াদি) ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি এবং স্থায়ী পদ্ধতির মধ্যে মহিলাদের জন্য টিউবেকটমি (লাইগেশন) ও পুরুষদের জন্য এনএসভি (নন-স্কালপেল ভ্যাসেকটমি)। এসব সেবা গ্রহণকারিরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই সেবা পাচ্ছেন। এছাড়া বাল্যবিয়ে বন্ধের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো হয়েছে।

 

বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভিসের (বিডিএইচএস) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে সারাদেশে ৬৪ শতাংশ দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি (সিপিআর) ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রামেই ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ সক্ষম দম্পতি এ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট