মৌসুমি জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন বাঁশখালীর বাসিন্দা জামিল হোসেন। চিকিৎসা নিতে তিনি ছুটে যান তার নিজ গ্রামের একটি ফার্মেসিতে। ফার্মেসিতে চিকিৎসক না থাকলেও কেন সেখানে গেলন এমন প্রশ্ন জানতে চাইলে জামিল হোসেন বলেন, সাধারণ অসুখের জন্য ডাক্তারের কাছে ছুটে যাওয়ার প্রয়োজন মনে হয়নি। তাই ফার্মেসি থেকেই নিয়মিত ওষুধ নিয়ে থাকি।’
শুধু জামিল হোসেনই নন, তারমতো গ্রামের বাসিন্দাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ভরসা হচ্ছে ফার্মেসিগুলো। যদিও ফার্মেসিগুলোতে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ বিক্রিতে বিধি-নিষেধ রয়েছে। অবশ্য কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন- গ্রামগুলোতে সরকারি হাসপাতাল থাকলেও সরকারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা নিয়মিত চেম্বার না করা, আবার গ্রাম থেকে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের যাতায়াত দূরত্ব, অসচেতনতাসহ নানান কারণেই ফার্মেসিগুলোতে ভরসাস্থল হিসেবে দেখেন গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন- প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র মনে করলেও ফার্মেসিগুলোতে অপচিকিৎসায় বিপদ ডেকে আনতে পারে রোগীদের। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ। এমন বাস্তবতার মধ্যেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে ফার্মেসি’।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ও শহরের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষজন ফার্মেসির চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চায়। কারণ অনেকেই বলছেন- চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার সহজলভ্যতা না থাকা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা, আর্থিক সামথ্য না থাকা, রোগীরা ফার্মেসিতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে ওষুধ কিনে তার রোগ সারাতে পছন্দ করেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এসএম সুলতানুল আরেফীন বলেন, যারা ফার্মেসি দোকানে চিকিৎসার জন্য ছুটে যায়, তাদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার উচিত। কেননা মানুষভাবে একজন চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে প্রচুর অর্থ ও শ্রম ব্যয় করতে হবে। আমি মনে করি এটাও একটা ভুল ধারণা। বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসকরা থাকেন, সেখান থেকেও মানুষ সেবা নিতে পারেন। তাহলে ফার্মেসি দোকানগুলোতে এমন চিকিৎসা কমে আসবে। একই সাথে আমাদেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।
পূর্বকোণ/আরডি