চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

ডাবের পানি পান করে সাড়ে ১০ লাখ টাকা খোয়ালেন যাত্রী, গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:৪৬ অপরাহ্ণ

গত ২১ আগস্ট আবদুল্লাহ আল মামুন নামে এক ব্যক্তিকে ডাবের পানির সাথে ঘুমের ওষুধের গুঁড়া মিশিয়ে খাইয়ে তার পকেট থেকে মানিব্যাগ, মোবাইল ও নগদ টাকা এবং দুটি এটিএম কার্ড নিয়ে যায়। প্রায় দুই দিন পর জ্ঞান ফিরে মামুন দেখেন এরমধ্যে দুটি এটিএম কার্ড ব্যবহার করে সাড়ে দশ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পৃথক অভিযানে চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে নগরীর পাহাড়তলী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন : সোহাগ ঘরামী (৪২),বিপ্লব চন্দ্র অধিকারী (৪১) এবং শাহাদাত হোসেন। পলাতক বাকী তিনজন হলেন, নাসির হোসেন, মিলন ও তিলক।

পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (ওসি) জহির উদ্দিন জানান, গত ২১ আগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় বাঁশখালীর বরগুনা গ্রামের মুফতি আবুল কালাম আজাদের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন (৩০) ফেনী বাসস্ট্যান্ড থেকে সিডিএম বাসযোগে কর্মস্থল মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া আসছিল। তিনি বাসের পেছনের সিটে বসেছিলেন। এ সময় গাড়িতে একজন ডাব বিক্রেতা উঠে। পানির পিপাসা লাগায় ৫০ টাকা দিয়ে ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে তিনি একটি ডাব কিনেন। ডাবের পানি পান করার পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আনুমানিক পৌনে আটটার সময় পাহাড়তলী থানার একে খান মোড়ে বন্দর ফিলিং স্টেশনের সামনে অচেতন মামুনকে রেখে তার পকেটে থাকা মানিব্যাগ, দুটি এটিএম কার্ড ও নগদ টাকা নিয়ে যায় ডাব বিক্রেতা ও তার সহযোগীরা। প্রায় দুইদিন পর জ্ঞান ফিরলে মামুন দেখেন দুটি এটিম কার্ড ব্যবহার করে এরমধ্যে সাড়ে দশ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। এ ব্যাপারে তিনি পাহাড়তলী থানায় একটি মামলা করেন।

তিনি জানান পরবর্তীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ব্যাংকের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বাসটি শনাক্ত করা হয়। বাসের সুপারভাইজার ইমাম হোসেনকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা দেড়টার সময় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রথমে অজ্ঞান পার্টির প্রধান বরগুনার পাথরঘাটার ফজলু ঘরামীর ছেলে সোহাগ ঘরামী (৪২) ও ঝালকাঠির রাজাপুর নৈকাঠি গ্রামের অধীর চন্দ্রের ছেলে বিপ্লব চন্দ্র অধিকারীকে (৪১) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বরগুনার পাথারঘাটা থানা এলাকা থেকে পাথারঘাটার গুটাবাছা গ্রামের মৃত নিজাম ফকিরের ছেলে শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা কৌশলে মানুষকে অজ্ঞান করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেন। ঘুমের ওষুধ রিবোট্রিল ২ মিলিগ্রামের পাঁচটি ট্যাবলেট গুড়া করে পানিতে মিশিয়ে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে ডাবের পানিতে পুশ করেন তারা। পরে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে কৌশলে পান করিয়ে সবকিছু হাতিয়ে নেয়া হয়।গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে নয় হাজার ৭’শ ৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকী টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট