চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

বাজারভেদে সবজির ভিন্ন দাম

বাজার ও এলাকাভেদে একই সবজির দুই ধরনের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১২:১৫ অপরাহ্ণ

ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম, বাজারে সবজি, মাছ, মাংসসহ কোনো কিছুতেই হাত দেয়া যাচ্ছে না। দামের এমন উত্তাপে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। বিশ্ববাজার বা পাইকারিতে কোনো পণ্যের দাম কমলেও এর প্রভাব সহজে পড়ে না খুচরা বাজারে। তারউপর একই পণ্য বাজার ও এলাকাভেদে ভিন্নদামে বিক্রি হতে দেখা যায়। গতকাল (বৃহস্পতিবার) নগরীর বহদ্দারহাট ও চকবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এদিকে, শীত আসতে এখনো কিছু সময় বাকি। কিন্তু, এরমধ্যে বাজারে দেখা মিলছে শীতের কিছু সবজির। তবে বেশ আকাশচুম্বী দামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। শীতের সবজির মধ্যে শিম, বেগুন, বরবটি, টমেটো, কাঁচামরিচ ও আলু এ ছয় পণ্য বাজারভেদে দাম হাকাচ্ছে ৪৫ থেকে ১৫০ টাকা।

 

গতকাল নগরীর এ দুই কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ডালায় ডালায় সাজিয়ে রেখেছে শিম, মুলা, গাজর, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। সঙ্গে রয়েছে মৌসুমী সব সবজিও। এসব সবজিতে ক্রেতাদের আগ্রহ থাকলেও খুব একটা কিনতে দেখা যায়নি। শ’ টাকার উপর বিক্রি হচ্ছে, শিম, বেগুন, বরবটি, গাজর, টমেটো ও কাঁচামরিচ। অন্য সবজির বাজারও ছিল চড়া। সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৮০ টাকার উপরে। ফলে যেকোনো সবজি কিনতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

 

চকবাজার কাঁচাবাজার :

এখানে শীতের সবজিগুলোর মধ্যে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। বেগুন ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, বরবটি ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় ও কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় এবং আলু ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শীতকালীন সবজির মধ্যে চায়না গাজর ১০০ থেকে ১১০ টাকা, মুলা ৩০-৪০ টাকা এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৪০ টাকায়, ঝিঙ্গা ৬০ টাকায়, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার :

তবে বহদ্দারহাটে সবজি চকবাজারের তুলনায় ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা যায়। এবাজারে প্রতি কেজি শিম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়,  বেগুন ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়, বরবটি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, টমেটো ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়, কাঁচামরিচ ১৩০-১৪০ টাকায়, আলু ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  এছাড়া, করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, পটল ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ঝিঙা ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, কচুমুখী ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, কচুর লতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, কচি মিষ্টি কুমড়ো প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, জালি কুমড়া (চাল কুমড়া) ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

এবাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, রসুন ২২০ টাকায় ও আদা ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়।

 

দুই বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চকবাজার থেকে বহদ্দারহাট বাজারে ৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।

 

শীতের সবজি সম্পর্কে দুই নম্বর গেট কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আবু সালেহ বলেন, বেশিরভাগ মানুষ শুধু দামাদামি করেন। কিনেন খুব কম মানুষ। তাই এখন আগের মত সবজি আনা হয় না। আর অন্য সবজিগুলো আড়ৎ থেকে যে দাম ধরে দেয়, তার বিপরীতে আমাদের পরিবহন খরচ, দোকান খরচ ও লাভ রেখে দাম নির্ধারণ করতে হয়ে। ফলে আড়তের সঙ্গে দামের পার্থক্য থাকে।

 

বহদ্দারহাটে বাজার করতে আসা ক্রেতা সৈয়দ মো. লিংকন বলেন, সবজির বাজারে এক হাজার টাকা নিয়ে এলে এক সপ্তাহের বাজার কিনে ঘরে ফেরা যায় না। কিছু সবজির দাম শুনেই চলে যেতে হয়। কেনার সাধ্য থাকে না। শীতকাল এলেই এসব সবজি কিনব।

 

এদিকে, নগরীর চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চিনি গত চার দিন আগে প্রতিমণ (৩৭.৩২ কেজি) দাম কমেছে ৪৫ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ পাইকারিতে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ১২৩ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে এখনো সেই চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। মাছের বাজার গত সপ্তাহের মতই অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়, লেয়ার ৩৩০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট