চট্টগ্রাম শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

কীর্তিমান চট্টলমানস মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী

মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ৭:২৪ অপরাহ্ণ

প্রীতিলতার স্মৃতিময়, প্রীতিময় অনুপম অনুভবের চট্টগ্রাম, সূর্যসেন-তারকেশ্বরদের নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত চট্টগ্রাম।

প্রতিবাদের চট্টগ্রাম, প্রতিরোধের চট্টগ্রাম, বিপ্লবের চট্টগ্রাম, আন্দোলনের চট্টগ্রাম, উন্নয়নের চট্টগ্রাম, প্রকৃতির চট্টগ্রাম, প্রাচ্যের চট্টগ্রাম। বীর প্রসবিনী, প্রতিরোধ উৎসারী চট্টগ্রামের রাউজানের ঢেউয়া হাজীবাড়ির সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। ১৯২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের উত্তাল বৈপরীত্য সময়ে তাঁর জন্ম। ১৯৪৩ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। স্ত্রী জহুরা বেগম। তিন পুত্র- তসলিমউদ্দিন চৌধুরী, জসিম উদ্দিন চৌধুরী এবং ডা. ম. রমিজউদ্দিন চৌধুরী। রাউজানের সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা। এই গ্রাম ব্রিটিশ ভারতে কবি নজরুলের পদধুলি ধন্য, ঐতিহাসিকতায় সুপরিচিত, সুখ্যাত। কবি নজরুলের স্মৃতিধন্য, প্রীতিধন্য, স্মৃতি-প্রীতি বিজড়িত এই গ্রাম। অবিভক্ত ভারতে ১৯৩৩ সালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তৃতীয়বারের মতো সাহিত্য-সম্মেলনে যোগ দিতে চট্টগ্রামে আসেন। কবি নজরুল ইউসুফ চৌধুরীর বাড়িতে দুইদিন অবস্থান করেন এবং এক সাহিত্য-সম্মেলনে যোগদান করেন।

নিবিড় সাহিত্যানুরাগী এই মানুষটি চট্টগ্রাম জেলার ডেপুটি কমিশনারের সহযোগিতায় জাতীয় কবি নজরুলকে স্মৃতিফলকের মাধ্যম দিয়ে রাউজানে ধরে রাখার দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রামের ভেটেনারি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের প্রকৌশল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ একাধিক উন্নয়নমূলক ঐতিহাসিক কাজে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে পেরেছিলেন। এক্ষেত্রে তাঁর বয়স কোন বাধা হয়নি। সমাজের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে কৃতকর্ম এবং স্মৃতি মানুষকে কীর্তিমান করে। মৃত্যুকে পিছনে ফেলে দেয়। মানুষের কর্মই মানুষকে কীর্তিমান করে। মহিমান্বিত করে। ইতিহাসে, সমাজে, উজ্জ্বল, অমলিন রাখে। মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী এমনই একজন মানুষ, একটি ব্যক্তিত্ব, একটি ইতিহাস।

মানুষ চিরন্তন নয়। চিরস্থায়ী নয়। পৃথিবী চিরস্থায়ী নয়। মানুষের সমাজ কালের বিবর্তনে, মহাকালের মহাস্রোতে হারিয়ে যায়, পরিবর্তিত হয়। এই নশ্বর পৃথিবীতে হারিয়ে যাওয়া মানবসমাজে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার কাজটি মানুষকে করতে হয় তার জীবনব্যাপি। সবার দ্বারা সম্ভব না হলেও কারো কারো দ্বারা সুশোভিত হয় মানবসমাজ। তারাই  সাধারণ্যে অসাধারণ । এভাবেই সময় সময়কে বদলে দেয়। সামাজিকতার মাধ্যম দিয়ে, পরিবর্তনের মাধ্যম দিয়ে পৃথিবী, সমাজ, পরিবর্তিত হয়, বিবর্তিত হয়। সংস্কৃতি, সামাজিকতা, আঞ্চলিকতা খোলস বদলায়, পরিবর্তিত হয় পৃথিবী। বিবর্তন ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় সময়। বর্তমান হয় অতীত, অতীত হয় ইতিহাস। মানুষের সমাজে মানবিক অমানবিক দুই প্রকার পরিবর্তন ঘটে। মানবিক সমাজ পরিবর্তনশীল। শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ সমাজ বদলের অগ্রদূত। অনন্যসাধারণ বিশেষণ মানুষকে পরিশ্রম দিয়ে, শ্রম দিয়ে, কঠোরতা দিয়ে, কোমলতা দিয়ে অর্জন করতে হয়।

সমকালীন সমাজকে জয় করে ভাবিকালীন সমাজের অগ্রদূত হতে মানুষকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। মানুষ কৃতকর্মের মধ্যদিয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার সুযোগ পায়, প্রয়াস পায়, চেষ্টা করে। তাই আমরা শুনে থাকি ‘এমন জীবন করিবে গঠন/মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন। দক্ষিণ বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা সব সময় আলাদা। এখানে সাগরের লোনা জল সিক্ত বাতাস আছে। সাগরের লোনা জলে বিধৌত বাতাসের কল্যাণীয় সৃষ্টিশীল পরশ আছে। আছে পরিবর্তনের বার্তা।

এই অনুপম আবহাওয়ায় গত শতকের তৃতীয় দশকের শুরুতে জন্ম নেয়া সমকালের মহাপুরুষ মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। আজীবনের কৃতকর্মের মাধ্যম দিয়ে মানবিক সমাজ গঠনের প্রয়োজনে রেখে যাওয়া, ফেলে যাওয়া মহৎ গুণে, মহৎ কর্মে বেঁচে আছেন মানুষের মাঝে। আজ তাঁর ষোড়শ মৃত্যুবার্ষিকী। গত শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের এই কীর্তিমান মানুষটির নিরলস কঠোর পরিশ্রম, উর্বর-অদম্য  দূরদর্শী সামাজিক চিন্তা ও চেতনা, সৃষ্টিশীল, কৃষ্টিশীল কর্ম তাঁকে কীর্তিমান করেছে, মূর্তিমান করেছে। তাঁর কাজ সমাজকে করেছে সমৃদ্ধ ও মহিমান্বিত এবং একটি অঞ্চলকে করেছে আলোকিত।

চট্টগ্রাম টু দ্যা ফোর। ব্রিটিশ ভারতের গর্বিত বক্তব্য। তখনকার উত্তাল সময় থেকেই চট্টগ্রাম সব সময় নিজেকে এগিয়ে রেখেছে, এগিয়ে থেকেছে। তা সম্ভব হয়েছে হাতে গোনা কয়েকজন ইউসুফ চৌধুরীদের অদম্য প্রচেষ্টায়। ইউসুফ চৌধুরী এই অঞ্চলের শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের অগ্রদূত। ১৯৪৫ সালে সামান্য পুঁজি নিয়ে তিনি পুস্তকের ব্যবসা শুরু করেন। তখনকার বাঙালি মুসলিম সমাজে শিক্ষার হার ছিল খুবই সামান্য। সমাজকে এগিয়ে নেয়ার মানসে মানুষকে সচেতন করার তাগিদে তাঁর দূরদর্শী যে চিন্তা, তারই অংশ আজকের সমৃদ্ধ সমাজ সচেতনতা।

কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, অধ্যবসায় তাঁকে সাফল্যের চূড়ায় তুলে নিয়ে আসে। শিক্ষার প্রতি তাঁর নিবিড় অনুরাগ, তাঁকে পরবর্তীতে সমাজ উন্নয়ন এবং সমাজ সংস্কারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ করে। প্রেস, প্রকাশনা, মুদ্রণশিল্পে তার বিচরণ সমাজকে অন্ধকার মুক্ত করার তাগিদ থেকে। দীর্ঘদিনের অধ্যবসায়, একাগ্রতা, শ্রম ও প্রচেষ্টা এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা তাঁকে ওষুধশিল্পসহ প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি, নিউজপ্রিন্ট প্রভৃতির সাথে সম্পৃক্ত করে। জীবনের শুরুতে তিনি পৃথিবীর নামি-দামি পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের এজেন্ট ছিলেন। তিনি পেঙ্গুইন ও পেলিকান প্রকাশিত পেপারব্যাক বইপত্র আমদানি শুরু করেন। মানুষকে জাগানোর এটি ছিল অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম বাঙালিদের পিছিয়ে পড়ার প্রক্রিয়া তাঁকে দারুণভাবে আঘাত করে। তিনি স্যার সৈয়দ আহমদকে মননে লালন করতেন। তিনি সেই ব্রিটিশ ভারতের শেষ সময়গুলোতে সমাজ সচেতনতামূলক কাজ, পাঠ ও প্রকাশনার দিকে নিবিষ্ট হন এবং মানুষকে আকৃষ্ট করতে থাকেন। তিলে তিলে তিনি সফল হতে থাকেন।

স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্নের আকার আকাঙ্খার চেয়েও বড় থাকতে হয়। ইউসুফ চৌধুরী স্বপ্ন দেখতেন। ক্ষুদ্র এবং সাধারণ প্যাকেজিং ইউনিট ব্যবসা থেকে কোটি টাকা বিনিয়োগের বিসিক শিল্পনগরীতে সিগনেট প্রেস বক্স ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন তাঁর অদম্য যাত্রাকে সম্প্রসারিত করে। দূরদর্শিতা ও শাণিত চেতনাকে প্রকাশ করে। গত শতকের শেষদিকে তাঁর সাধনার ফসল, পরিশ্রমের প্রকাশ পূর্বকোণ কাগজটি জন্মগ্রহণ করে। তিনি এর গর্বিত জন্মদাতা। জন্মের পর থেকেই নিরন্তর প্রতিযোগিতামূলক পথচলা। একের পর এক বিজয়মালা অর্জন করা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিকাশে, বিস্তৃতিতে,  জনসম্পৃক্ততা, জনপ্রিয়তায় ঈর্ষণীয় অবস্থানে অবস্থান করেছে কাগজটি। পাঠকের রুচি ও মননশীলতাকে জয় করেছে।

প্রকাশে, প্রচারে এটি এই অঞ্চলে শীর্ষে অবস্থান করছে। কাগজটি এই কীর্তিমানের অনন্য কীর্তিগুলোর অন্যতম। ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন যুগকে পিছনে ফেলেছে চট্টগ্রামের এই জনপ্রিয় দৈনিকটি। ১৯৯৪ সালে  কাগজটি বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মূল্যায়নে এই অঞ্চলের পত্রিকাসমূহের শীর্ষে উঠে আসে। মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর দূরদর্শী নেতৃত্বে পত্রিকাটি দিনে দিনে সমৃদ্ধ হয়েছে। নিকট অতীতে পত্রিকাটি বাংলাদেশ সরকারের প্রেস ইনস্টিটিউট কর্তৃক সেরা আঞ্চলিক পত্রিকার সম্মাননা পেয়েছে। পেয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক এবং আঞ্চলিক প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা। অনন্য এই সম্মাননা জাতীয়ভাবে আঞ্চলিকতার মহিমান্বিত স্মারক। মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর কৃতকর্মের অনন্য স্বীকৃতি এটি। এ অঞ্চলের মানুষকে, আঞ্চলিক বিকাশকে সমৃদ্ধ করেছে, সুখকর করেছে, মহিমান্বিত করেছে এ প্রাপ্তি।

নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার ও আধুনিক সাংবাদিকতায় দৈনিক পূর্বকোণ ইতিমধ্যেই মানুষের মননে স্থায়ী আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করে। মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাটি ইতিমধ্যেই ছাপার জগতে পিটিএস বা ফটো টাইপসেটিংস কৃতিত্ব অর্জন করেছে। এছাড়াও ২৪ ঘণ্টার অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু করে পত্রিকাটি অত্যাধুনিক জগতের ক্রিয়া-কলাপের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে বেশ আগে থেকেই। এসব কৃতিত্বে মহিমান্বিত চট্টগ্রামের মানুষ। সেইসাথে মহিমান্বিত ইউসুফ চৌধুরীর তৃপ্ত আত্মা। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের তার এ প্রচেষ্টা অগ্রবর্তী চিন্তার ফসল। কাগজটির কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে সময়ের সাথে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে প্রখ্যাত লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, প্রতিবেদক এবং সমাজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গ। মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর অনন্য সৃষ্টি পূর্বকোণ কাগজটির একদল নিষ্ঠাবান কর্মীবাহিনী, সংবাদ সংগ্রাহক, প্রতিবেদক প্রমুখদের নিরন্তর প্রচেষ্টার পরিচয় দিয়ে চলেছে। তাদের যৌথ প্রচেষ্টার মেধাবী স্বাক্ষর আজকের এই অপ্রতিরোধ্য কাগজটি।

কর্মে নিষ্ঠা, সততা, ধর্মানুরাগ, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা একজন ইউসুফ চৌধুরীকে প্রতিষ্ঠা করেছে সমাজ সংস্কারক এবং প্রাগ্রসর চিন্তার অগ্রদূত হিসেবে। তিনি কালোত্তীর্ণ পুরুষ। পরিশ্রম, নিয়মানুবর্তিতা, সময় মেনে চলা প্রভৃতি কঠোর সামাজিক-পারিবারিক বিধানগুলো একজন ইউসুফ চৌধুরীর ভেতর তীব্রভাবে লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসার উদ্যোগ, শিল্প প্রতিষ্ঠা ও সমাজের পিছিয়েপড়া অংশকে এগিয়ে নেয়ার সামাজিক কর্মকাণ্ড জনাব চৌধুরীকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে মানবদরদী হিসেবে, সমাজ সংস্কারক হিসেবে এবং সমাজের সচেতন ব্যক্তি হিসেবে। সংকটে, সংশয়ে, আর্থিক অনটনে, অঘটনে তিনি কখনও উদ্যম-উৎসাহ হারাননি। সকলপ্রকার বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার যে সফল মানুষটি, তারই নাম জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী।

এই কীর্তিমান পুরুষ এবং তার বৈশিষ্ট্যমন্ডিত কাগজটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যাতনার জন্ম দেয়নি। প্রথাগত বিশেষণে বিশেষায়িত হওয়ার বিড়ম্বনামুক্ত। যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেনি কখনও। নামে কিংবা কামে ইতিহাস বিকৃত করেনি, করে না। ইতিহাসের আলোকধারাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত থাকে না। জাতীয় কোনপ্রকার ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার কলঙ্ক মুক্ত। জাতির গৌরবময় অর্জন ও অহংকারের সাথে প্রতারণা করেনি, করে না। এ সব মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর আদর্শের সামাজিক শিক্ষার প্রতিফলন। তার সৃষ্ট এ কাগজটির সাথে সসম্পৃক্ত লেখক পাঠক প্রতিবেদক, সাংবাদিক, সকলকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আদর্শিক মূল্য দেয় এ প্রকাশনা গোষ্ঠী।

সময়ের সাথে বোল, তাল, ছন্দ,গন্ধ, খোলশ কোনটিই পাল্টায় না। সামাজিক, আদর্শিক মানদণ্ডে তাই এর নিজস্ব পথ ইতিহাস হয়ে এর শিকড়কে গভীর থেকে গভীরে প্রোথিত করে। এখানেই কাগজটি অন্য থেকে ভিন্ন। গন্ধে, বর্নে আঙ্গিকে, অস্তিত্বে, আদর্শে নিজস্ব শৈলীতে। এসব অর্জনের একক কৃতিত্ব এর জন্মদাতা সমাজ বিবর্তনের সৈনিক মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর। পরবর্তীতে এর সাথে সম্পৃক্ত-সংশ্লিষ্ট সকলের। এই মেধাবী শিল্পপতি, সমাজ সংস্কারক, চট্টলদরদী মানুষটি ২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পবিত্র হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গমন করেন।

মহান স্রষ্টার অপার কৃপায় সেখানেই তিনি দেহত্যাগ করেন। আমরা তাঁর স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করি শ্রদ্ধাভরে। চট্টগ্রামসহ এদেশের মানুষের জন্য এই কীর্তিমান মানবের অভাব পূরণ হবার নয় কোনদিন। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি আমরা। বেঁচে থাকুন মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মের মাঝে। এসব সামাজিক কর্মকান্ডে বয়স তাঁকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারেনি। কর্মনিষ্ঠ, কালোত্তীর্ণ এই দীপ্তকীর্তি মানুষটির ষোড়শ প্রয়াণ দিবস আজ। আমরা তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি। তাঁর কর্মোদ্যোগগুলো বিকশিত থাক নিরন্তর। চট্টগ্রামের মানুষের অন্তরে, মননে তিনি অনিবার্য, কীর্তিমান মহাপুরুষ হয়ে অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন। এ প্রত্যাশা প্রত্যেকের।

লেখক: মুহাম্মদ ইদ্রিস আলি,  বীর মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, কর্ণফুলী গবেষক; বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়ক।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট