চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

মুরাদপুরে নালায় তলিয়ে যাওয়া সালেহ আহমেদের ছেলের আক্ষেপ

পাইনি বাবার লাশ, পাইনি ক্ষতিপূরণও

রাজীব রাহুল

২৪ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:২৮ অপরাহ্ণ

টানা আট-দশ দিন খোঁজার পরও বাবার লাশ পাইনি। লাশ না পাওয়ায় পৃথিবীর সব সন্তানের বাবার কবর থাকলেও আমার বাবার কোনো কবর নেই। কতো অভাগা মানবজীবন আমার চিন্তা করেন। বাবার কবর জিয়ারত করার সৌভাগ্য থেকেও বঞ্চিত আমি। 

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকালে নগরীর মুরাদপুর মোড়ে নালার পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলছিলেন ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট একই জায়গায় জলবদ্ধতায় উন্মুক্ত নালায় পা পিছলে পড়ে তলিয়ে যাওয়া সালেহ আহমদের একমাত্র ছেলে সাদেকুল্লাহ মহিম।

সালেহ আহমদ পটিয়ার মনসা চৌমুহনী এলাকার ইব্রাহিম বাচ্চু চেয়ারম্যানের বাড়ির বাসিন্দা।

মহিম বলেন, আমার পরিবারে উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি ছিল বাবা। তিনি ঘটনার দিন মাইজভাণ্ডার যাওয়ার পথে সকাল ১১টার দিকে নালায় পড়ে যান। ঘটনার ১ ঘণ্টা পর বিষয়টি আমি জানতে পারি- তখন আমি চকবাজার এলাকায় ছিলাম। এসে দেখি ফায়ার সার্ভিস এসে ঘটনাস্থলে কাউকে না পেয়ে চলে গেছে। আমরা ফোন দেওয়ার পর আবারও বিকাল ৩টা সময় ফায়ার সার্ভিসের টিম আসে। তারা পুরো নালায় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খুঁজে আমার বাবাকে পায়নি। পরদিন সকালে তারা চশমা খাল থেকে মির্জা খাল পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করে বিকাল ৩টায় অভিযান সমাপ্ত করে। পরে আমরা টানা আট-দশ দিন খোঁজার পরও বাবার লাশ পাইনি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমার ছোট বোন, মা আর অসুস্থ দাদুকে নিয়ে বিপাকে পড়লে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী আমাকে একটি পেট্রোল পাম্পে চাকরি দেয়। তখন আমি একাদশ শ্রেণিতে পড়ি। যার কারণে ১২ ঘণ্টার চাকরিটা আমার করার উপযুক্ত ছিল না। তথন আমি কয়েকবার মেয়রের কাছে গিয়ে অনুরোধ করি আমাকে যেন তিনি চসিক অফিসে একটা পিয়নের চাকরি হলেও দেন। তিনি আমাকে দেননি। পরে মাস’দুয়েক পর আমি চাকরিটি ছেড়ে দিই। বর্তমানে আমি আদালতে আমার বাবার মৃত্যুর ঘটনায় কেন আমার চসিক ও সিডিএ ক্ষতিপূরণ দিবে না তার জন্য রুল জারি করি। আদালত ৪ সপ্তাহের মধ্যে দুই সংস্থাকে জবাব দিতে নোটিশ ইস্যু করলেও তারা এটার কোনো জবাব দেয়নি। তাই আমি আপনাদের মুখোমুখি হয়েছি।

ঘরে অসুস্থ দাদু , ছোট বোন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জানিয়ে সাদেকুল্লাহ মহিম বলেন, আমি নিজেও ডিগ্রি প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমার বাবা থাকলে পড়ালেখা নিয়ে আমার চিন্তা করতে হতো না। নিরাপত্তা বেস্টনি ছাড়া উন্নয়ন কাজ করায় আমার বাবার অকাল মৃত্যু হয়েছে। এই দায় দুই সংস্থা এড়াতে পারে না। আশা করছি আপনাদের মাধ্যমে আমি সরকারের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাবো।

পূর্বকোণ/আরআর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট