ক্ষোভের অনলে পুড়ছে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা। সদ্য ঘোষিত দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় এ ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে পদবঞ্চিতদের হামলায় আহত হয়েছেন ৪ জন। কমিটি ঘোষণার সাত দিনের ব্যবধানে পৃথক তিনটি স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলাও হয়েছে।
দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি থেকে বাদ পড়া ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীর হামলার শিকার হন সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন ও নতুন কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফিরোজ। রিকশা করে গত ১৭ আগস্ট রাতে নগরীর বাসায় ফেরার পথে তারা দুইজন জামালখানে হামলার শিকার হন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘বিমানের টিকেট করা বাবদ জিয়াউল হক জোনাইদ এর কাছে আমি সাড়ে তিন লাখ টাকা পাই। এ টাকা চাওয়ার কারণে তার সাথে আমার বাকবিত-া হয়। তারই জের ধরে জিয়াউল হক জোনাইদ, ইসতিয়াক নোমান জামি, মাসুদ সিকদারসহ প্রায় ৯জন আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমিসহ দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফিরোজ আহত হয়। এ ঘটনায় ১৮ আগস্ট ৯জনকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করি। এখন হামলাকারীরা উল্টো এটিকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
ঘটনা সম্পর্কে পদবঞ্চিত জিয়াউল হক জোনাইদ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘যদি পাওনা টাকার জন্য এ ঘটনা ঘটে তাহলে এটি আগে ঘটেনি কেন? মূলত দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে মোহাম্মদ মহসিনের সরাসরি ইন্ধন রয়েছে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাকে ব্যবহার করে ছাত্রদলের ত্যাগী ও মাঠের নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা রয়েছে। তাই পদবঞ্চিত ক্ষুব্ধ নেতারাই তার উপর হামলা করেছে। হামলার শিকার হওয়ার পর তিনি এখন এটিকে পাওনা টাকার কথা বলে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
এদিকে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে রীতিমত ক্ষুব্ধ অবস্থায় রয়েছেন পদবঞ্চিতরা। তাদের হামলায় কয়েকদিন আগে আনোয়ারায় আহত হন দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম আলম খান। জেলা বিএনপির এক নেতার অনুসারী হওয়ার কারণে তিনি এ হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলেও জানা গেছে। তারই জের ধরে নগরী কিংবা কর্ণফুলী ব্রিজের আশেপাশে নতুন কমিটি ঘোষণার পর কোন মিছিল করতে পারেনি। তারা শুধুমাত্র কর্ণফুলী থানাধীন ক্রসিং এলাকায় একটি মিছিল বের করে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের ৪২ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এর স্বাক্ষরিত এই কমিটিতে রবিউল হোসেন রবি আহ্বায়ক ও মো. কামরু উদ্দিন (সবুজ) সদস্য সচিব হন। ঘোষিত কমিটিতে ইয়াবা মামলার আসামি, চাকরিজীবী, বিবাহিত, সিনিয়রকে ডিঙ্গিয়ে জুনিয়রকে গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া ঘোষিত কমিটির অনেকের ছাত্রত্বও নেই বলে জানা গেছে। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভে ফুঁসছেন পদবঞ্চিতরা।
পূর্বকোণ/পিআর