চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

রপ্তানি পণ্যে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা : হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:০৩ অপরাহ্ণ

গত ৩ বছরে চট্টগ্রামের দুটিসহ মোট ১৯টি প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম কম দেখিয়ে ৪২৪ টি কনটেইনারে ৫ হাজার ৭৫৭ টন পোশাক রপ্তানি করে ১৪৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে আসে। আর এই খবর ছড়িয়ে পরার পর নড়েচড়ে বসে কাস্টমস হাউসগুলো। পাশাপাশি নজরদারি বাড়ানো হয় রপ্তানি পণ্যের কায়িক পরীক্ষায়। আর এতেই শতভাগ কায়িক পরীক্ষা ও বন্ডের হয়রানিতে শুরু হয় নতুন ভোগান্তি। এমন অভিযোগ তোলেছেন তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

 

সম্প্রতি কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। তবে কাস্টমসের দাবি, শুল্ক ফাঁকি ও বিদেশে টাকা পাচার রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

 

চলমান এই সমস্যা সমাধানে আজ রবিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে ৬ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরে বৈঠক করবে বিজিএমইএ।

 

চরম সংকটের মধ্য দিয়ে চলা তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলোর উদ্যোক্তারা বলছেন, ‘ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে যা পাচ্ছি তা-ই অর্ডার নিচ্ছি।’ তবে অর্ডার অনুযায়ী পণ্য রপ্তানি করতে গিয়ে কাস্টমস এবং বন্ডের নানামুখী হয়রানিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ গার্মেন্টস সংশ্লিষ্টদের। তাদের মতে, রপ্তানির ঠিক আগ মুহূর্তে কার্টন থেকে পণ্য বের করে ওজন করার পাশাপাশি কাঁচামাল আমদানিতে এইচএস কোড নিয়ে কাস্টমস জটিলতা সৃষ্টি করছে।

 

বিজিএমইএ’র অভিযোগ, প্রাইভেট আইসিডিগুলোতে রপ্তানিযোগ্য গার্মেন্ট পণ্যের কার্টন খুলে প্রতিটি আইটেম ওজন করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে বিল অব এন্ট্রি এবং বিল অব এক্সপোর্টের নথির সঙ্গে পণ্যের বিবরণও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

আর কাস্টমসের এই কাজটিকে হয়রানি হিসেবেই চিহ্নিত করেছে গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। চট্টগ্রামের তিন থেকে চারটি প্রাইভেট আইসিডিতে কাস্টমসের এ ধরনের হয়রানি চলছে বলে বিজিএমইএর অভিযোগ।

 

শুধু কার্টন খুলে পণ্য ওজন করে দেখা নয়, কাস্টমস এবং বন্ডের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি অভিযোগ এনেছে বিজিএমইএ। বিশেষ করে বিশেষায়িত পোশাক ছাড়াও অন্যান্য পণ্য তৈরির জন্য কাঁচামাল আমদানি করতে হচ্ছে। আর এখানেই কাস্টমস এবং বন্ডের হয়রানি বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজিএমইএর।

 

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ড লাইসেন্স নেওয়ার সময় আইটেম ক্যাটাগরি অনুযায়ী বন্ড লাইসেন্স নিয়েছি। কিন্তু অর্ডার কম হওয়ার কারণে আমাদের বিভিন্ন আইটেম করতে হচ্ছে, তাই সেই আইটেমের ওপর যেহেতু থাকতে পারছি না, ফলে বন্ড লাইসেন্স সেটা অ্যালাউ করে না। নতুন আইটেম করতে হলে নতুন ম্যাটেরিয়ালস আনতে হয়। সেই নতুন ম্যাটেরিয়ালস বন্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে সময় লাগছে এবং মাল যখন এসে যায় সেটা খালাস করতে সময় লাগছে। এগুলোর কারণে বন্ড ও কাস্টমসের সঙ্গে আমাদের জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।’

 

তিনি বলেন, ‘রপ্তানি করতে গেলে গ্রস ওয়েট এবং নেট ওয়েট নিয়েও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ কারণে আমরা কাস্টমসকে বলছি, এখন ক্রাইসিস পিরিয়ড, এখন আমরা যেটা পাচ্ছি সেটা অর্ডার নিচ্ছি। সে জায়গায় আপনারা যদি আমাদের সহযোগিতা না করেন সে ক্ষেত্রে রপ্তানিতে যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেটা মুখ থুবড়ে পড়বে।’

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট