জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা কমান্ড এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষ থেকে ‘বিনম্র শোকাঞ্জলি ও কথামালা’ অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ- চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ও মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। মুখ্য আলোচক চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নূরে আলম মিনা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বশর মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির আহমদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সচিব কাজী রাজিশ ইমরান, যুগ্ন আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন, মিজানুর রহমান সজীব, জেলা আহবায়ক মশিউজ্জামান সিদ্দিক পাভেল ও সদস্য সচিব কামরুল হুলা পাভেল প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির আহমদ বলেন, সকল অপশক্তি, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য প্রতিরোধ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে দেশের সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্মদের সহায়তা কামনা করেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম ফকরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস আর বঙ্গবন্ধু একে অন্যের সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশকে বঙ্গবন্ধু যেভাবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছিলেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নূরে আলম মিনা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সাহসিকতার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অনেক পুলিশ সদস্য আত্মহুতি দিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী রাজাকার সাইদীকে গ্রেফতার ও রায় প্রদানের পর সারা বাংলাদেশে অনেক পুলিশ সদস্য আহত ও হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষসহ অনেক পুলিশ সদস্যদের পুড়িয়ে দিয়েছে, হেলমেট খুলে মাথা থেতলে দিয়েছে, বহু হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে, পুড়িয়ে ধবংস করা হয়েছিলো দেশের অনেক স্থাপনা। এখনো জামাত শিবিরের কর্মীরা তথাকথিত প্রগতিশীলদের লেবাস নিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুজব ও প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে আর তাদের সেই ফাঁদে পা দিয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হচ্ছে। তিনি সকল ধরনের গুজবের প্রোপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান।
প্রাধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অভিন্ন একটি সত্তা তাই জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে যেখানে পাকিস্তানিরা পর্যন্ত প্রশংসা করছে সেখানে যারা স্বাধীন বাংলাদেশ চায়নি তারা এখনো বিরোধিতা করছে, এখনো ইতিহাস বিকৃতি করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের নাগরিকরা বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা একটি বড় ভুল ছিল বলে মনে করে কিন্তু এদেশের রাজাকার ও তাদের দোসররা তা বিশ্বাস করতে চায় না। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন যে যুদ্ধ সেটি বুদ্ধিভিত্তিক ও জ্ঞানের। সেই যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে আর জয়ী হতে হলে আমাদার সঠিক ইতিহাস জানতে হবে।
পূর্বকোণ/রায়হান/জেইউ/পারভেজ