মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আয়োজনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা দুটির প্রত্যেকটিতে জামায়াত-শিবিরের ৬৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় দুইশ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আজ আদালতে পাঠানো হচ্ছে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, মামলা দুটির মধ্যে একটি বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারা এবং আরেকটিতে দণ্ডবিধি আইনের ১৪৩, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩, ১৮৬, ১৮৯ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪০ জনকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে আসরের নামাজের পর নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত ইসলামী। আছরের নামাজের আগে জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ ঘিরে জামায়াত-শিবির কর্মী ও সাঈদীর সমর্থকরা জড়ো হয়। কিন্তু আসরের নামাজের আগে পুলিশ জমিয়তুল ফালাহ মাঠে প্রবেশের গেট বন্ধ করে দেয়। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আসরের নামাজের আগে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করে। এতে পুলিশ বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
এ সময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জামায়াত-শিবির কর্মীদের একটি অংশ দামপাড়া পুলিশ লাইনে সিএমপি সদর দপ্তরে এবং পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ধাওয়া করার সময় পুলিশের লাঠিচার্জে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের কয়েকজন এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠের চারদিকে কাজীর দেউড়ি থেকে চট্টশ্বরী ও ওয়াসা মোড় হয়ে গরীব উল্লাহ শাহ মাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পুলিশ দফায় দফায় ধাওয়া করে জড়ো হওয়া নেতকর্মীদের তাড়িয়ে দেয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলাকালে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাঈদীর মৃত্যু হয়।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ