চট্টগ্রাম ওয়াসার ১৬ নম্বর পাম্প হাউসের জায়গায় অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে সাতটি দোকান। এখন সেই ভূমি ফেরত চেয়ে ওয়াসার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভূমি মালিকের স্বজন। মহানগর সিনিয়র সহকারী জজ ৫ম আদালতে সম্প্রতি এ মামলা করা হয়। মামলায় চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান, প্রধান প্রকৌশলী, এস্টেট অফিসার, সচিব, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চান্দগাঁও থানাধীন খাজা রোডের খালাসি পুকুর পাড় এলাকায় চট্টগ্রাম ওয়াসার ১৬ নম্বর পাম্প হাউসের জায়গা দখল করে সাতটি দোকান তৈরি করে সংস্থাটির নন সিবিএ’র কিছু নেতা। ১৯৬৫ সালে নগরীর খাজা রোড এলাকার জনৈক বাসিন্দা আলী আহমদ এই পাম্প হাউস নির্মাণের জন্য ওয়াসাকে ২৪ শতক জমি দান করেন। কিন্তু দানকৃত ভূমিতে পাম্প হাউসের আড়ালে পাকা দোকান তৈরি করায় ক্ষুব্ধ হন তার স্বজনরা। ওয়াসার কাছে তাদের জমি ফেরত চেয়ে ইতোমধ্যে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে লিগ্যাল নোটিশও প্রেরণ করে। কিন্তু প্রতিকার না পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তারা। এ প্রসঙ্গে ওই পাম্প হাউসে ভূমিদাতা আলী আহমদের নাতি স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আজিম দৈনিক পূর্বকোণকে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার দাদা জমি দান করেছিলেন ওয়াসার পাম্প হাউস নির্মাণের জন্য। কিন্তু ওয়াসার কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মচারী সেই জায়গায় ব্যবসা করার জন্য দোকান নির্মাণ করে। তাই পাম্প হাউসের বাইরে অবশিষ্ট জমি ফেরত চেয়ে আদালতে মামলা করেছি।’
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে ১৬ নম্বর পাম্প হাউসের জায়গায় দোকান নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া নির্দেশনা দিয়েছি। যে কোন সময় এগুলো বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হবে।’
অভিযোগে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসায় সিবিএ ও নন সিবিএ সংগঠনের বাইরে ‘দি ওয়াসা এমপ্লয়িজ কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ (রেজিস্টেশন নং-৩১৮) নামে একটি সংগঠন রয়েছে। এ সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ওয়াসার কর্মচারী রেজওয়ান হোসেন দুলাল ও মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে ওয়াসার কতিপয় কর্মচারী আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ওয়াসার জায়গা অবৈধভাবে দখল করে সাতটি দোকান নির্মাণ করে। ইতোমধ্যে নির্মাণকৃত প্রতিটি দোকানের জন্য অগ্রিম সালামি আদায় করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ওয়াসার এস্টেট বিভাগ থেকে অনুমতি ব্যতিত কোন দোকান বা ঘর নির্মাণ না করার জন্য তাদের কাছে চিঠিও দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠেছে অফিস আদেশের চিঠিতে কোন ধরনের কর্ণপাত না করে তারা পাকা দোকান নির্মাণ করে। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে জমি ফেরত চেয়ে মামলায় যায় ভূমিদাতার স্বজনরা।
পূর্বকোণ/পিআর