চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে ক্ষোভ

চাকরিজীবী, বিবাহিত ও ছাত্রত্ব না থাকাদের প্রাধান্যই বেশি

মোহাম্মদ আলী 

১৩ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:২০ অপরাহ্ণ

চাকরিজীবী, বিবাহিত, সিনিয়রকে ডিঙ্গিয়ে জুনিয়রকে গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে ঘোষিত দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে। ঘোষিত কমিটির অনেকের ছাত্রত্বও নেই বলে জানা গেছে। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভে ফুঁসছেন পদবঞ্চিতরা।

গত ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের ৪২ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এর স্বাক্ষরিত এই কমিটির সদস্য সচিব হন কর্ণফুলী থানাধীন মো. কামরু উদ্দিন (সবুজ)। তিনি নগরীর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও.আর নিজাম রোড শাখার সিনিয়র ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘গত মে মাসে আমি ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমি ছাত্র রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকি।’

ঘোষিত কমিটিতে আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়াও ১৪ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ২৫ জনকে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন- আরফিন রিয়াদ, আসাদুজ্জামান সাজ্জাদ, আব্দুর সবুর, শেখ মো. হোসেন নয়ন, মো. রাশেদ উদ্দীন, নাঈমুল আলম, অলিউল হোসেন রুবেল, শোয়াইবুল ইসলাম চৌধুরী, শাহাদাত হোসেন, রেজাউল করিম মিজান, ফরহাদুল ইসলাম, রাশেদুল কবির, মো. মহিউদ্দিন ও নুর শাহাদ খান রাশেদ।

দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদপ্রত্যাশী জিয়াউল হক জোনাইদ দৈনিক পূর্বকোণকে অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘোষিত কমিটিতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। বিবাহিত ও চাকরিজীবীদের নিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে। দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার ইচ্ছার কাছে সক্রিয় থাকা নেতারা পদবঞ্চিত হয়েছেন। ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি এসএসসি পাস করেছেন ২০১৩ সালে। তার চেয়ে ৬ বছরের সিনিয়র সদস্য সচিব মো. কামরু উদ্দিন সবুজ এসএসসি পাস করেছেন ২০০৭ সালে। ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফিরোজ মিট লাইফ ইনস্যুরেন্সে চাকরি করেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে ২০০৭ সালে এসএসসি পাস যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর সবুর ব্যাংকের ফিল্ড অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরেফিন রিয়াদ ইস্টার্ন ব্যাংক বোয়ালখালী শাখায় কর্মরত। ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশীদের অবিবাহিত হতে হবে, কঠোরভাবে বিধিনিষেধ থাকলেও বর্তমানে ৪২ সদস্যের ঘোষিত কমিটিতে বিবাহিত ও প্রবাসীদের পদায়ন করা হয়েছে। যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈমুল আলম নাঈম ও ফরহাদুল ইসলাম বিবাহিত, আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল কবির এক সন্তানের জনক।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঘোষিত দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। তারপরও সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কাজ করে যেতে হবে।’

এদিকে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কয়েকজন তৃণমূল কর্মী অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদলের এই কমিটি নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা বাণিজ্য করেছেন। দলের আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করা কর্মীদের স্থান না দিয়ে তিনি অর্থের বিনিময়ে বেশিভাগ কর্মীকে কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। এছাড়া দক্ষিণ জেলার আরেক বিএনপি নেতা কমিটিকে নিজের কব্জায় নিতে কাজ করেছেন। এ কারণে তারা নিজেদের পছন্দের নেতাদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করেছেন। ফলে এ নিয়ে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভের অনলে ফুঁসছেন।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট