গত পাঁচদিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে কমে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য ডেলিভারি। স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে দিনে চার হাজার কনটেইনার ডেলিভারি হলেও রবিবার ডেলিভারি হয়েছে মাত্র ২ হাজার ২০৪টি কনটেইনারের পণ্য।
বন্দরের ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতার বিভিন্ন ইয়ার্ডে বৃষ্টির কারণে ডেলিভারি কমে গিয়ে ৩২ হাজার টিইইউএস কনটেইনার মজুদ হয়ে পড়ে রয়েছে। বন্দরের হিসেব অনুযায়ী গত ৫ আগস্ট বন্দর ইয়ার্ডে ৩২ হাজার ৭৭ টিইইউএস কনটেইনার ছিল। পরদিন ৬ আগস্ট কনটেইনারের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৮১৮ টিইইউএস কনটেইনার। গতকাল বন্দরের ইয়ার্ডে জমা পড়েছে ৩২ হাজার ৫৯৩ টিইইউএস কনটেইনার।
কাজের সমস্যার কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজি মাহমুদ ইমাম বিলু পূর্বকোণকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাসে সমস্যা হচ্ছে। সিএন্ডএফ এজেন্টসরা স্যাম্পল নিয়ে কাস্টমসের যাতায়াত করতে পারেন না। আবার কিছু পণ্য বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকায় ডেলিভারিই নেওয়া হয় না। আবার বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে খাতুনগঞ্জে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিচ্ছেন না। কারণ তাদের গুদামেও পানি ঢুকে গেছে। যার কারণে ডেলিভারি কমে গেছে এবং বন্দরে পণ্যের চাপ বাড়ছে।
পণ্য ডেলিভারি প্রসঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ব্যবসায়ীরা পণ্য ডেলিভারি নিতে চান না। পাশাপাশি খোলা পণ্যের (চাল, ডাল, গম ইত্যাদি) খালাস বন্ধ রাখায় বহির্নোঙরে জাহাজের সারি বাড়ছেই। সবমিলিয়ে আমাদের কাজের গতি কিছুটা কমেছে।
এদিকে, ভোগ্যপণ্যের পাশাপাশি তেলসহ বিভিন্ন খোলা পণ্য প্রায় আড়াই হাজার লাইটার জাহাজের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু ভারী বর্ষণের কারণে গত তিনদিন ধরে বহির্নোঙর থেকে শুধুমাত্র কয়লা ও পাথর ছাড়া বাকি পণ্যগুলোর খালাস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে পতেঙ্গা, মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটে অলস পড়ে আছে বেশিরভাগ লাইটার জাহাজ।
জানা যায়, বৃষ্টির কারণে বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেল থেকে খোলা পণ্যের লাইটারিং বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি ও সাগরের পরিস্থিতি বুঝে ক্লিংকার, কয়লা, বালু এসব পণ্য নিয়ে কিছু লাইটার জাহাজ চলাচল করছে। তবে অধিকাংশ লাইটারই বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরাও অলস সময় পার করছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ