টানা চারদিনের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর বিভিন্ন এলাকা। ডুবে গেছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, অলি-গলি, নিচতলার বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জলাবদ্ধতায় বাসাবন্দী হয়ে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয় নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ফেরত আসে।
গত তিনদিনের মত গতকাল রবিবারও বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, অলি-গলি, নিচতলার বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জলাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুতায়ন এড়াতে বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা।
গতকাল (রবিবার) বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনু যায়ী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৩১ দশমিক ৪ মিলিমিটার এবং আমবাগান আবহাওয়া অফিসের ছিল ১৯৬ মিলিমিটার। আরো দু’দিন ভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস।
চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, সিডিএ তাদের প্রকল্পের আওতাধীন খাল থেকে যে পরিমাণ মাটি (৯ দশমিক ৫ কিউবিক মিটার) উত্তোলনের কথা তার চার ভাগের এক ভাগ মাটিও তোলে নাই। খালের প্রস্থও কমিয়েছে রাস্তা করার জন্য। প্রয়োজনমত মাটি উত্তোলন না করায় খালের গভীরতাও কমেছে। জলাবদ্ধতার আরেকটা কারণ হলো- স্লুইসগেটসমূহ এক্টিভ করা হয়নি এবং পানি পাম্প আউট করার জন্যও কোন ব্যবস্থা এ পর্যন্ত করে নাই। ফলে পানি স্লো নামছে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, খালের জায়গা অধিগ্রহণ এবং নালা ও ড্রেন যদি সিটি কর্পোরেশন নিয়মিত পরিষ্কার না করে প্রকল্পের সুফল মিলবে না।
গত তিনদিনের মত গতকাল (রবিবার) সকাল থেকে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ধীরে ধীরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এ সময় নগরীর বাকলিয়া, চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, কাতালগঞ্জ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, শান্তিবাগ আবাসিক, ছোটপুল-বড়পুল, গোসাইলডাঙ্গা, হালিশহর, আগ্রাবাদসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
নগরীর বিভিন্ন নিচু এলাকায় দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বাসা-বাড়িতে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে, বৃষ্টি থামার কিছুক্ষণের মধ্যে কিছু কিছু এলাকার পানি সরে গেলেও চকবাজার, বাদুরতলা, বাকলিয়াসহ অনেক এলাকার পানি দীর্ঘক্ষণ ছিল। নালা ও ড্রেন পরিষ্কার না থাকায় সড়ক ও অলি-গলি থেকে পানি খালে যেতে সময় লেগেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পূর্বকোণ/মাহমুদ