ঢাকার প্রবেশমুখে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে আটক গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমানউল্লাহ আমানকে আপ্যায়নের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, তাদের চিকিৎসাসহ যা যা প্রয়োজন সব যেন ঠিকমতো করা হয়। এটাই প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতা। তিনি মানবতার নেতা। কিন্তু আরেক নেতা (খালেদা জিয়া) জ্বালাও-পোড়াও করা, হত্যা করা এসব পছন্দ করেন।’
শনিবার (২৯ জুলাই) রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে এসে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, আপনি বলেছেন বিএনপির এক নেত্রী (নিপুণ রায়) আগুনসন্ত্রাস করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। তারপরও সেই নেত্রীর শ্বশুরকে ডিবি অফিসে এনে আপ্যায়ন করা হয়েছে। আরেক নেতাকে প্রধানমন্ত্রী উপহার পাঠিয়েছে। তার মানে যারা পুলিশের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দিলো, তাদের তোষামোদি করছেন?
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তারা যখন আটক হয়েছেন, তখন রাস্তায় পড়ে গিয়েছেন। আমাদের পুলিশ বাহিনী শুধু কাজ করে না; তারা মানবতার বাহিনী। পুলিশ বিএনপির এক নেতাকে হৃদরোগ হাসপাতালে নিয়েছে, চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। আরেকজনকেও চিকিৎসাসেবা দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের কোকোর কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ ঢাকায় আসার পর দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপর দরজাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই দৃশ্য আপনাদের মনে আছে? সেদিন দরজা তো খোলেননি, বাইরে এসে কথাবার্তাও বলেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গয়েশ্বর রায়-আমানউল্লাহ আমান হালকা ধাক্কা খেয়ে যে পড়ে গিয়েছেন, এটা শুনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, তাদের চিকিৎসাসহ যা যা প্রয়োজন সব যেন ঠিকমতো করা হয়। এটাই হলো মানবতার নেতা। প্রধানমন্ত্রী যে ‘মাদার অব হিউমিনিটি’, সেটার পরিচয় তিনি সব সময় দিয়ে থাকেন। আরেক নেতা তো জ্বালাও-পোড়াও ও হত্যাকাণ্ড পছন্দ করেন।’
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গেলে গাবতলী থেকে আমানউল্লাহ আমান ও ধোলাইখাল মোড় থেকে গয়েশ্বর রায়কে আটক করে পুলিশ। এরপর তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে আমানউল্লাহ আমানকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হলে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি প্রতিনিধি দল তাকে খাবার, বিভিন্ন প্রকার মৌসুমি ফল ও জুস, একটি ফুলের তোড়া তুলে দেন।
অন্যদিকে গয়েশ্বর রায়কে চিকিৎসা দিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ফল ও সোনারগাঁও হোটেল থেকে খাবার এনে তাকে আপ্যায়ন করেন ডিএমপির গোয়েন্দাপ্রধান হারুন অর রশীদ। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে সর্বত্র।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ