রান্নার মসলা হিসেবে লবঙ্গ আমরা প্রায় সবাই চিনি। এটি মানব শরীরের জন্য বেশ উপকারী। শরীরের বেদনানাশক এবং জীবাণুনাশক উপদান রয়েছে লবঙ্গতে। লবঙ্গ দিয়ে তৈরি তেলে প্রচ্রর পরিমাণে ইউজেনল উপাদান উপস্থিত রয়েছে, এটিও মানব দেহের জন্য খুবই কার্যকরী।
লবঙ্গতে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে। যেটি দাঁতের ব্যথা দূর করে এবং মাড়ি ক্ষয় রোধ করে। পাশাপাশি মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এতে থাকা ফাইবার। পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, ডিসপেপসিয়া, এরাফ্লাটুলেন্স এবং নসিয়ার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
হাড় শক্ত এবং মজবুত করতে লবঙ্গের ভূমিকা অপরিসীম। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ইউজিনল ডেরিভেটিভস এবং ফেনোলিক কম্পাউন্ড-ইউজিনল উপাদান। যা দেহে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ম্যাঙ্গানিজের প্রধান উৎস এটি। তাই হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় ক্যালসিয়ামের মত ভূমিকা পালন করে এটি। নিয়মিত লবঙ্গ সেবন করলে হাড়ের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। মাথাব্যথা কমাতে কার্যকরী এটি।
ক্লান্তি ভাব বা স্ট্রেস কমাতে লবঙ্গ খুবই উপকারী একটি উপাদান। প্রতিদিন মাত্র একটি অথবা দুইটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে স্ট্রেস অথবা ক্লান্তি ভাব দূর হয়। অনেকেই আছেন যাদের যানবাহনে চড়লেই বমি বমি ভাব হয়। এই বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতে গাড়িতে ওঠার আগে এক থেকে দুইটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে রাখুন। হজম শক্তি বাড়িয়ে খাবারের রুচি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বিভিন্ন রোগ, যেমন বিশেষ করে জ্বর, সর্দি-কাশি এবং পেটের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দূর করে খাবারে রুচি বাড়ায়।
রক্তে উপস্থিত থাকা ক্ষতিকর উপাদানগুলি বাইরে বের করে দিতে সক্ষম লবঙ্গ। বহুবছর ধরে ক্যান্সারের ঔষধ হিসেবে লবঙ্গের ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ লবঙ্গ হলো অ্যান্টি অক্সিডেন্টের আধার, যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা যায়, নিয়মিত লবঙ্গ সেবন করলে শরীরে কোনো রকম টিউমার থাকলে সেটির বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ক্যান্সারের কোষগুলিকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য খুবই উপকারী এটি। লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে এবং মুখের ব্রণ দূর করে।
লবঙ্গের তেল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকে নিরাময় করে এটি। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে শরীরে যতটা পরিমাণ ইনসুলিনের প্রয়োজন ততটা পরিমাণ ইনসুলিন শরীর উৎপাদন করতে পারে না।
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা যায়, লবঙ্গ শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন করতে সাহায্য করে এবং দেহের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং রক্তে সুগারের মাত্রা হ্রাস পায়। আর্থ্রাইটিস রোগ থেকে মুক্তি দেয়। এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হাঁটুর ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, পেশির ব্যথা এবং ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। সর্দি-কাশির মহাঔষধ এটি।
পূর্বকোণ/মাহমুদ