কয়লাচালিত মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে আজ শনিবার (২৯ জুলাই)। এই ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি চালুর আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটি (মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের) পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে শনিবার (২৯ জুলাই)। আর আগামী ডিসেম্বরে এই ইউনিটটি নিয়মিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট; আগামী বছর মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে উৎপাদনের যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে জানান আবুল কালাম আজাদ। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি পুরোপুরি চালুর পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।
সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জাপানের সহায়তায় মোট প্র্যায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর অন্যতম।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পুরো প্ল্যান্টে প্র্যতিদিন ১০ হাজার টন ও প্র্যতিটি ইউনিটে ৫ হাজার টন কয়লা প্র্যয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং ৬৫ হাজার টন আগামী ৭ আগস্ট উৎপাদন এলাকায় পৌঁছাবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাংকে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দু’টি জেটির পাশাপাশি ইতোমধ্যে ১৭ লাখ টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাংক নির্মাণ করা হয়েছে। ট্যাংকগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে।’ কয়লা সরাসরি জেটি থেকে ট্যাংকে অফলোড করার কারণে এটি পরিবেশবান্ধব হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাতারবাড়ি গভীর বন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাছে এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৫ বছরের জন্য আজীবন ছাই সংরক্ষণে দুটি পৃথক ছাই পুকুর রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর ও অন্যটির ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালের ১৬ জুন একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সহায়তা হিসেবে জাইকা ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও পিসপিজিসিবিএল-এর নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করা হচ্ছে। প্রকল্পটির দু’টি অংশ, যার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অন্যটি বন্দর।
সূত্র : বাসস।
পূর্বকোণ/মাহমুদ