চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

বর্তমান কর্মবাজারে চাহিদাপূর্ণ ডিগ্রী বিবিএ (অনার্স) প্রফেশনাল

১৮ জুলাই, ২০২৩ | ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

ফাহমিদা ইয়াসমিন ডাচ বাংলা ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ছাত্রজীবনেই ক্যারিয়ার সচেতন ফাহমিদার স্বপ্ন ছিল ব্যাংকার হওয়ার। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হয়েও এইচএসসির পর ভর্তি হন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত কলেজ ইনস্টিউট অব বিজনেস স্টাডিজ (IBS)-এ। মাত্র ৪ বছরে বিবিএ (অনার্স) প্রফেশনাল কোর্স সম্পন্ন করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে যোগদান করেন তিনি। 

তিনি বলেন, এইচ এস সি’র পর উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনায় ব্যবসায়শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ বিবিএ। এমনকি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং এর পর বিবিএ-কে ক্যারিয়াররুপে বেছে নেয়। আসলে হুজুগে পড়ে নয়, বাস্তবতার নিরিখেই অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের এই সিদ্ধান্ত। কেননা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে সি ভি ড্রপ করতে গেলেই বিবিএ ডিগ্রীটি অপরিহার্য। বিবিএ শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিভাগ, নিরীক্ষা বিভাগ, ট্যাক্স,আর্থিক প্রশাসন,আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিভাগে রয়েছে কাজের সুযোগ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও বেশ কিছু নামকরা সরকারী কলেজ থাকতে বেসরকারী আইবিএস কলেজ কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ নিয়ে শুরুতে আমারও সংশয় ছিলো! কিন্তু যখন একাডেমিক বিবিএ ও প্রফেশনাল বিবিএর মধ্যে পার্থক্য জানতে পারলাম, তখন আর সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করিনি।

এ প্রসঙ্গে নগরীর হালিশহরস্থ (বড়পোল এর সন্নিকটে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ইনস্টিউট অব বিজনেস স্টাডিজ (IBS) এর অধ্যক্ষ শরীফুল ইসলাম জানান প্রফেশনাল অনার্স সম্পর্কে বিস্তারিত ।

প্রফেশনাল অনার্স : প্রফেশনাল অনার্স হলো স্পেশাল কোর্স নিয়ে পাঠদান। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ০২ ধরনের অনার্স পাঠদান করা হয় যেমন- বিজনেস ফ্যাকাল্টির অনার্স এবং অপরটি হচ্ছে আইবিএ অনার্স। তাছাড়াও স্পেশালি সেখানে বিভিন্ন ইউনিট/ইনস্টিটিউট থাকে যেমন: চারুকলা, শিক্ষা গবেষণা, প্রযুক্তি ও ফার্মেসী ইউনিট থাকে। এখানে অনুরুপ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অধিভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এবং কোর্স গুলোর প্যাটার্ন অনুসারে  ০২ টি সম্মান কোর্স তৈরী করেছে, যার একটির নাম “স্নাতক (সম্মান)” অন্যটি স্নাতক (সম্মান) প্রফেশনাল”।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ অনার্স এবং প্রফেশনাল অনার্স এর মূল পার্থক্যগুলো হলো ?

১। সাধারণ বিষয়গুলোর অনার্স কোর্স দেশের সরকারি ও বেসরকারি কলেজে গুলোতে পড়ানো হয়। অপরদিকে প্রফেশনাল অনার্স কোর্স শুধুমাত্র বেসরকারি কলেজ/ইনস্টিটিউটে পড়ানো হয়।

২। সাধারণ অনার্স বিষয়ের পাঠদান শিক্ষার্থী বাংলা কিংবা ইংরেজিতে গ্রহণ করতে পারে এবং পরীক্ষার উত্তর প্রদান বাংলা কিংবা ইংরেজিতে দিতে পারে। কিন্তু প্রফেশনাল অনার্স কোর্সের পাঠদান ও পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর প্রদান সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে করতে হয়। যদিও পাঠদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের বুঝার সুবিধার্থে বাংলাতে লেকচার প্রদান করে থাকে।

৩। সাধারণ অনার্স বিষয়ের পরীক্ষা গুলো প্রতি বর্ষ/বছর অনুযায়ী হয়ে থাকে। অর্থাৎ ০৪ বছরে ০৪ বার। কিন্তু প্রফেশনাল অনার্স কোর্সগুলো সেমিস্টার অনুযায়ী হয়ে থাকে। প্রতি ০৬ মাসে সেমিস্টার হয়। অর্থাৎ ০৪ বছরে ০৮ সেমিস্টারে ০৮ বার পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে হয়।

৪। সাধারণ অনার্স কোর্সের বিষয়গুলোতে লিখিত পরীক্ষাগুলো হয়ে শতকরা ৮০ মার্কের, ২০ মার্ক কোর্স টিচারের হাতে থাকে। প্রফেশনাল অনার্স কোর্সের  লিখিত পরীক্ষাগুলো হয়ে ক্ষেত্র বিশেষ শতকরা ৬০ থেকে ৭০ নম্বরের, ইনকোর্স মার্ক থাকে ৩০ থেকে ৪০ কোর্স টিউটরের হাতে।

 ৫। সাধারণ অনার্স কোর্স গুলোতে স্টুডেন্টদের দেখা যায় নিয়মিত কলেজে না আসা কিংবা ক্লাশ না করার প্রবণতা বেশি। শুধুমাত্র ইনকোর্স কিংবা টেস্ট পরীক্ষার সময় আনাগোনা দেখা যায়। কিন্তু প্রফেশনাল কোর্সে নিয়মিত ক্লাশ টেস্ট, এ্যাসাইমেন্ট, কুইজ ও হোম ওয়ার্কে যুক্ত হতে হয়।

 তাই এককথায় বলা যায়, সাধারণ অনার্স কোর্স ও প্রফেশনাল অনার্স কোর্সের সনদপত্রের মান এক হলেও শিক্ষার গুণগত মানে প্রফেশনাল অনার্স কোর্স একধাপ এগিয়ে। তাই সম্প্রতি এইচএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তির সুযোগ পায়নি এবং বিপুল অর্থ লগ্নি করে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সক্ষমতাও যাদের নেই,তাদের জন্য স্বল্প খরচে এই বিবিএ কোর্সটি অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং কাংখিত, একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

 কেন  আইবিএস কলেজ ?

কলেজ অধ্যক্ষ শরীফুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষকবৃন্দের পরিচালনায় অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট, পড়াশুনার মান, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি, শিক্ষকবৃন্দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত মেধা তালিকায় নিয়মিত স্থান করে নিচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৬টি ব্যাচের হাজারো ছাত্র-ছাত্রী তাদের বিবিএ ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন এই প্রতিষ্ঠান থেকে। কারণ এখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক কর্তৃক ক্লাশ ও পরীক্ষা পরিচালিত হয়। আছে মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ ও সি সি টিভি নিয়ন্ত্রিত ওয়াই ফাই ক্যাম্পাস এবং সুপরিসর লাইব্রেরী ও পাঠ মূল্যায়নের জন্য রয়েছে পাক্ষিক, মাসিক এবং IC EXAM । একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষাসফর, সাংস্কৃতিক আয়োজন, জাতীয় দিবস উদযাপন ও খেলাধূলাসহ নানা সহশিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে পরিপূর্ণ শিক্ষায় আলোকিত হয়ে  এই প্রতিষ্ঠানের অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী এখন ব্যাংক, ডিফেন্স এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

ভর্তির যোগ্যতা : এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ  ২.৫ (৪র্থ বিষয়সহ) পেয়ে উত্তীর্ণ মানবিকবিভাগের শিক্ষার্থীরা ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩.০০ (৪র্থ বিষয়সহ) এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ (৪র্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত বিজ্ঞান ও ব্যবসায়শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ৪ (চার) বছর মেয়াদী এই কোর্সে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির জন্য আবেদেন করতে পারবেন।

ভর্তি হতে আগ্রহীরা www.nu.edu.bd/admissions ওয়েবসাইটে কলেজ কোড-৪৩৫৮ ক্লিক করে এফিলিয়েশন সম্পর্কে এবং Apply Now (Hons.-Professional) অপশনে ক্লিক করে ৩০/০৭/২০২৩ এর মধ্যে আবেদন ফরম পূরণ করে অথবা সরাসরি কলেজ ক্যাম্পাসে এসে ভর্তি হতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে হালিশহর, বড়পোল মোড় এর সন্নিকটে, (এ বি ব্যাংক এর উপরে), facebook.com/IBS.Ctg পেইজে এবং ০১৭১১-৪২৪২৯৫, ০১৬২-৫১৬৬০০ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট