চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

পারকিনসন রোগের ঝুঁকি কমায় দারুচিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ জুলাই, ২০২৩ | ১২:৪১ অপরাহ্ণ

দারুচিনি অত্যন্ত সুস্বাদু মসলা। আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগে থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর চাষ হচ্ছে। ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে চীনে ওষুধ হিসেবে এর ব্যবহারে প্রমাণ পাওয়া যায়। দারুচিনি দিয়ে প্রাচীন মিসরে শ্বাসকষ্টের ওষুধ বানানো এবং মাংস সংরক্ষণ করা হতো। শুধু অনন্য স্বাদের জন্য নয়, দারুচিনি বিখ্যাত তার গুণাগুণের জন্যও। এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

 

হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের উপর করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা প্রতিদিন ১২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ দারুচিনি খেয়েছেন, তাদের রক্তে এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, এইচডিএল (ভালো) কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এতে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি কমে যায়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর এন্টিঅক্সিডেন্ট আলঝেইমার ও পারকিনসন রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

 

রক্তের চিনির মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমিয়ে দিতে পারে। তাই প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে এক চা চামচের বেশি দারুচিনি খাওয়া ঠিক নয়। শিশুদের ক্ষেত্রে মাত্রাটি আরও কম। এতে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। এই উপাদানগুলোর জন্যই দারুচিনি আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতে বেশ কার্যকর। পশ্চিমের অনেক দেশেই রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় দারুচিনির সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়।

 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দারুচিনি কার্যকর : রান্নায় ব্যবহৃত মসলার মধ্যে অন্যতম হল দারুচিনি। শুধু স্বাদ বা সুগন্ধ নয়, বিভিন্ন ঔষধি গুণও রয়েছে দারুচিনিতে। দারুচিনিতে রয়েছে সিনামালডিহাইড (ত্বকের টিস্যু তৈরি করে)। যা খাবারের সুগন্ধ ছাড়াও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উপকারী।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে দারুচিনি। ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস ইনফেকশনের যম।

 

দারুচিনির সুন্দর ঘ্রাণ আসে এর ভেতর থাকা ‘সিনামালডেহাইড’ নামের একটি বিশেষ তেল থেকে। এ জন্য সর্দি-কাশি হলে চিকিৎসকেরা মাঝে-মধ্যে দারুচিনি চা খাওয়ার পরামর্শ দেন। ব্যাকটেরিয়াজনিত মুখের সংক্রমণ, দাঁতের ক্ষয় আর মুখের দুর্গন্ধ দূরে রাখতে বেশ উপকারী এটি।

 

গবেষণায় থেকে জানা যায়, খাওয়া-দাওয়া করার পর রক্তে যে গ্লুকোজ যোগ হয়, তার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে দারুচিনি। হজমের সময় কার্বোহাইড্রেটের ভাঙনকে ধীর করে দেয়। অন্যদিকে, এর পলিফেলনে থাকা এমএইচসিপি নামের একটি যৌগ ইনসুলিনের মতো কাজ করে। কোনো কোনো গবেষণায় বলেছে, এই যৌগ ইনসুলিন ক্ষরণের মাত্রা বাড়ায়। এভাবে দারুচিনি টাইপ–টু ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট