চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

বহু খামারে রয়ে গেছে কোরবানির গরু

ইফতেখারুল ইসলাম

৪ জুলাই, ২০২৩ | ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

এবারের কোরবানির হাটে শুরু থেকে একটা গুমোট ভাব ছিল। বিক্রেতারা কম দামে পশু ছাড়েনি। ক্রেতারাও দরদামে সময় পার করেছে। তবে শেষের দিকে এসে বড় গরুর চাহিদা এবং দাম দুটোই কমেছে। অনেক খামারেই কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা গরু অবিক্রিত রয়ে গেছে। সব গরু বিক্রি করতে না পারায় অনেক খামারি হতাশ হয়েছেন।

 

জানতে চাইলে নাহার এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রকিবুর রহমান টুটুল পূর্বকোণকে বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার অন্তত ৩০ শতাংশ কোরবানিদাতা কমেছে বলে তার ধারণা। আর যারা বড় গরু কিনে কোরবানি দিতেন, তারা ছোট গরু কিনেছেন। দেশে ডেইরি শিল্পের বিপ্লব ঘটেছে উল্লেখ করে বলেন, এখান পাড়ায় পাড়ায় উদ্যোক্তা। তাই পাড়ায় পাড়ায় কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে। সব কোরবানির পশু হাটে যায়নি। ক্রেতারা খামার কিংবা পাড়ার গলি থেকে কোরবানির পশু কিনে নিয়েছেন। তাই শেষদিকে এসে বড় গরুর দাম কিছুটা কমে গেছে। অনেক খামারির কিছু সংখ্যক গরু অবিক্রিত রয়ে গেছে। তিনি জানান, এবার তার খামারে উৎপাদিত ৪৫০টি গরুর সবগুলোই বিক্রি করেছেন। তার গরু বিক্রি হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে বলেন, তার স্থায়ী ক্রেতা রয়েছে যারা প্রতিবছর কিনেন। তাছাড়া কোরবানিকে উপলক্ষ করে তিনি দাম বাড়ান না। তাই তার সব গরু বিক্রি হয়ে গেছে।

 

শুলকবহর এলাকার ফাতেহা এগ্রো’র পার্টনার ওমর কাইয়ুম পারভেজ পূর্বকোণকে বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে গরুর দাম আগে থেকেই বাড়তি ছিল। এখানে খামারিদের কোন হাত নেই। এবার খামারে অবিক্রিত গরু থেকে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল যারা অতীতে একা একটি গরু কিনত তারা এবার কয়েকজন মিলে ভাগে কোরবানি দিয়েছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, শুলকবহর এশিয়ান হাউজিং সোসাইটির গলিতে গত বছর অন্তত ১২টি গরু জবাই হয়েছিল। এবার হয়েছে ৬টি। এতেই বুঝা যায় কোরবানিদাতা কমেছে। তাই তাদের খামারসহ অনেক খামারে কিছু সংখ্যক গরু রয়ে গেছে।

 

পতেঙ্গা এলাকার মোল্লা ডেইরি’র স্বত্বাধিকারী মো. হানিফ পূর্বকোণকে বলেন, এবারের কোরবানির ঈদে বড় গরুর চাহিদা কম ছিল। অতীতে যারা বড় গরু দিয়ে কোরবানি দিতেন তারা ছোট গরু কিনেছেন। আবার অনেকেই যারা ভাগে কোরবানি দিতেন তাদের অনেকেই এবার কোরবানি করেননি। তাই অনেক খামারে বড় গরু রয়ে গেছে। মানুষের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

 

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর পূর্বকোণকে বলেন, গরু থেকে যাওয়ার অর্থ হল আমাদের পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়েছে। বাইরে থেকে বৈধ-অবৈধ কোন পথেই গরু আসার প্রয়োজন নেই। তবে এবারের কোরবানিতে ছোট গরু, ছাগল এবং ভেড়া জবাই তুলনামূলক বেশি হয়েছে। তাই কিছু খামারে বড় গরু অবিক্রিত রয়ে গেছে। এতে তাদের দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছুদিন পর জবাই করে কেজি দরে বিক্রি করলেও তারা ভালো দাম পাবেন।

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট