চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘ছড়ার আধ্যাত্মিক পুরুষ ও ছড়ার ফেরিওয়ালা সুকুমার বড়ুয়া’

অনলাইন ডেস্ক

২৫ জুন, ২০২৩ | ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ

রোস্তম আলির দোস্ত ছিল, পোস্তগোলার ওস্তাগার, সস্তা দামে গোস্ত নিতে, বস্তা খোঁজে মোস্তফার/”অসময়ে মেহমান ঘরে ঢুকে বসে যান…….এমনি অনেক ছন্দময় ও অন্তমিলের বাংলা ছড়ার মুকুটহীন সম্রাট বাংলাদেশের প্রখ্যাত ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া। শনিবার (২৪ জুন) বাংলা সাহিত্যের এ জীবন্ত কিংবদন্তির উপস্থিতিতে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম আয়োজন করেছে ‘সুকুমার সন্ধ্যা’। নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউট  মিলনায়তনে বোধনের আবৃত্তিশিল্পীরা ছড়ায় ছড়ায় জীবন্ত কিংবদন্তী সুকুমার বড়ুয়ার যাদুকরি ছড়ার অনন্য মুহূর্ত মেলে ধরে।

 

শুরুতেই সুকুমার রায়ের ছড়ায় বোধনের শিশুবিভাগের শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের প্রশিক্ষণ সম্পাদক সঞ্জয় পাল। সম্মাননা প্রদান পর্বে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি সোহেল আনোয়ারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বোধনের সাধারণ সম্পাদক এস এম আব্দুল আজিজ। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন এনায়েত বাজারস্থ মহিলা কলেজ চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহানা শরমিন তালুকদার। তিনি বলেন, ‘বোধনের এ মুহুর্তটা খুবই সম্মানের। যেখানে বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী ছড়ার যাদুকর স্বয়ং উপস্থিত রয়েছেন। বোধনের এ আয়োজনের প্রশংসনীয় ভূমিকা রয়েছে।’

এছাড়া সুকুমার বড়ুয়ার প্রিয় ছড়া নিয়ে আলোচনা পর্ব অতিথি সঞ্চালক ছিলেন শিশুসাহিত্যিক ছড়াকার রাশেদ রউফ। তিনি এ পর্বে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের রচিত ছড়ার মূল্যায়নে প্রাণবন্ত করে রাখেন। এতে অতিথি আলোচক ছিলেন কবি ও নাট্যজন সঞ্জীব বড়ুয়া, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, শিশুসাহিত্যিক জসীম মেহবুব।

 

অতিথি আলোচকরা বলেন, ছড়ার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ছন্দ। যেখানে ফুটে উঠেছে ছন্দের যাদুর খেয়াল, রয়েছে অনুপ্রাসের পাশাপাশি বিদ্রুপ। তাই খুবই স্বতঃস্ফূর্ত ও তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এতো প্রিয় ছড়া লিখেছেন। কোনটা প্রিয় সেটা বলা খুবই দুষ্কর। যেখানে সময়ের বাস্তবতা, সমাজ মনষ্কতা, মানবতার প্রতিচ্ছবি, মধ্যবিত্তের দারিদ্র্যতা ও শোষণের কষাঘাত উঠে এসেছে। তাই তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি বাংলা একাডেমির তিনটি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ছড়ার এ আধ্যাত্মিক পুরুষ বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত কিংবদন্তি কবি হিসেবে সমাদৃত।

একক ও বৃন্দ পরিবেশনায় অংশ নেন বোধনের শিশুবিভাগের শিল্পী অনুদীপ নাথ, অনুশ্রী দাশ, অন্বেষা দাশ, অভিনব বড়ুয়া, অভিমন্যু বড়ুয়া, অভিরূপ সেন, অরিত্র চৌধুরী, অরিত্র বড়ুয়া, অরিত্রা এঞ্জেল, অরুন্ধতী বড়ুয়া, অর্জয়িতা নন্দী ঘুড়ি, আইমান বিন নাছির চৌধুরী, আনভিতা আরুশি, আন্তর্লীনা কর, আয়ুশ বরুয়া, আরাধ্যা ঋদিনী কুহু, আরাধ্যা দাশ, আরিনাভ রুদ্র, ইচ্ছে বড়ুয়া, ইয়াস চৌধুরী, উদ্দীপ্ত দাশ, ঋত্তিকা খাস্তগীর, ওমি সেন, চিন্ময় চৌধুরী, দিব্য দাশ, দেবাজ্যোতি দে, নুসরাত বিনতে নাছির, পূর্ণতা চক্রবর্তী, প্রত্যুষ বিশ্বাস, প্রিয়মা দাশ, প্রেক্ষা দাশ, মোহাম্মদ বিন আব্দুল কায়াম চাঁদ, রাজন‍্য ঘোষ, রাজর্ষি চৌধুরী, রাজর্ষী চৌধুরী, রাফিয়াতুন সানজানা রিহা, রোশনী বিশ্বাস, শামসুল আদনান চৌধুরী, শোভন দাশ, শৌভন দাশ, শ্রবণা ভৌমিকা, শ্রেষ্ঠ বিশ্বাস, সনম নন্দী, সিদরাতুল মুনতাহা তোয়া, সীমান্ত দে, সুহিতা দে, সোয়াদ সাদমান আলম, স্বাগতা চক্রবর্তী, অরিত্রিকা চৌধুরী, ইয়াশরা ফাতিমা প্রমুখ।

 

শিশুদের এ প্রযোজনার নির্দেশনা ও মহড়া পরিচালনায় ছিলো আবৃত্তিশিল্পী ঈশা দে। সঞ্চালনায় শিশু আবৃত্তিশিল্পী সুপ্তি দাশ ও পূর্ণ বিশ্বাস। ছিল বড়দের পরিবেশনায় আবৃত্তিশিল্পী সঞ্জয় পালের নির্দেশনায় ‘মেজবান হাইলে আয়ুন’ দলীয় প্রযোজনা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বেশি সময় মনোরম এ সুকুমার সন্ধ্যায় উপস্থিত সংস্কৃতি প্রিয়দের মনে পিনপতন নীরবতায় প্রাণ সঞ্চারিত করে। আরও উপস্থিত ছিলেন ছড়ার এ ফেরিওয়ালার সহধর্মিণী ননী বালা বড়ুয়া, ছেলে অরূপ রতন বড়ুয়া, মেজো মেয়ে রঞ্জনা বড়ুয়া।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট