অবশেষে কাজীর দেউড়ি মোড়ে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’র অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় আউটার স্টেডিয়ামে মঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পরে পুলিশ কাজীর দেউড়ি মোড়ে অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। আজ (বুধবার) বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগে তারুণ্যের সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের ছয় বিভাগে তরুণদের নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করছে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন। যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু গতকাল (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেশে ক্রান্তিকাল চলছে। মানুষের ভোটের অধিকার নেই। গত ১৫ বছরে চার কোটি নতুন ভোটার হয়েছে, যারা ভোট দিতে পারেননি। ভোট মানুষের নাগরিক অধিকার। ভোটাররা একটি রাষ্ট্র পরিচালনায় দল বা ব্যক্তিকে বেছে নেয়। কিন্তু চার কোটি ভোটার তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ’ স্লোগানে বিভাগীয় সমাবেশের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন। সালাউদ্দিন টুকু বলেন, নব্বইয়ের সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছেন। সে জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করেছে ফ্যাসিবাদী সরকার। গত ১৫ বছর ধরে যারা নতুন ভোটার হয়েছে তারা ভোট দিতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রওনক উল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, চট্টগ্রাম স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম ও সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সমাবেশের জন্য আউটার স্টেডিয়ামে মঞ্চ প্রস্তুত করা হচ্ছিল। পুলিশ সেখানে মঞ্চ তৈরিতে বাধা দেয়। আউটার স্টেডিয়ামে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। তিনি বলেন, সমাবেশ ছাত্র-যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের হলেও ভোট এবং ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বস্তরের মানুষ যোগ দেবেন বলে আশা করছি।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, কাজীর দেউড়ি মোড়ের সার্কিট হাউস অংশে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে সমাবেশ করা হবে। সার্কিট হাউস ও রেডিসন ব্লু’র প্রবেশ পথ বন্ধ না করার শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সমাবেশের প্রচারণা : চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ’ লাখো তারুণ্যের সমাবেশে পরিণত হবে। ভোটার অধিকার রক্ষার সংগ্রামে দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশে জনসমুদ্রে পরিণত হবে। বিগত ১৪ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তরুণ প্রজন্ম ভোটার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকারদলীয় লোকজন ও সরকারি প্রশাসন একযোগ একদলীয়ভাবে সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ব্যালটে সিল মেরেছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে বাকলিয়া থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রচারণা শেষে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, সদস্য গাজী সিরাজ উলাহ, ইয়াসিন চৌধুরী আসু, মোহাম্মদ তৈয়ব, ইব্রাহিম বাচ্চু, হাসেম সওদাগর, এমআই চৌধুরী মামুন, মো. আলমগীর, হাজি নবাব খান, মো. সেকান্দর, আবদুলাহ আল সগীর, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ইয়াকুব চৌধুরী নাজিম, ইমরান উদ্দিন, নাজিমুল হক নাজ, আলী আজগর, মোহাম্মদ ইউনুছ, এটিএম ফরিদ, মো. কামরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম নীরব, ফোরকান উদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. জাহাঙ্গীর, গুলজার হোসেন লেদু, মোহাম্মদ ইয়াকুব, মাইনুদ্দিন পারভেজ, ইয়াকুব খান বাবু, মোহাম্মদ কালু, আবুল কালাম আবু প্রমুখ।
চট্টগ্রাম-৮ আসন : দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেছেন, বরিশালের মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর উপর আওয়ামী লীগের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ তাদের ছাড়া বিরোধীদলের কোনো প্রার্থীকেই সহ্য করতে পারে না। হামলা চালিয়ে, আক্রমণ করে অথবা যে কোনো প্রক্রিয়ায় তাদেরই বিজয়ী হতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সরকারের হুকুমের বাইরে চলতে পারে না। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো অবস্থাতেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রস্ততিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, সদস্য মঞ্জুর আলম মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ আল হারুন, আবদুল কাদের জসিম, এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইদ্রিস আলী, আব্দুল আজিজ, নকীব উদ্দিন ভূঁইয়া, আবু মুসা, জসিম উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া, জানে আলম জিকু, মো. ইলিয়াছ, এডভোকেট এফএ সেলিম, মো. আসলাম প্রমুখ।
পূর্বকোণ/এএইচ