চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ও তুলাতলী মৌজায় উপকূলীয় বনের মধ্যে গড়ে তোলা বহুল আলোচিত কোহিনুর স্টিল শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (২৯ মে) দুপুরে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহাদাত হোসেন। অভিযানকালে সমুদ্র সিকস্তি ভূমিতে গড়ে তোলা শিপইয়ার্ডটির নবনির্মিত দুটি ভবনের বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সলিমপুর ও তুলাতলী মৌজায় প্রায় ১০ একর জায়গায় কয়েকবছর ধরে কোহিনুর স্টিল নামক একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের কাজ করছেন স্থানীয় এক শিল্পপতি। ইতোমধ্যে সেখানে ইয়ার্ডের অফিস নির্মাণ, ৫টি হুইন্স মেশিন স্থাপন, বনের মধ্যদিয়ে সুপ্রশস্ত রাস্তা তৈরিসহ নানান কাজ করা হয়েছে। কিন্তু ঐ ইয়ার্ডের চারপাশের উপকূলীয় বনের হাজার হাজার সরকারি গাছ রয়েছে। ইয়ার্ড নির্মাণে প্রচুর গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে শিপইয়ার্ডটির ইজারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। শুধু তাই নয়, বেলা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে লিগ্যাল নোটিশও দেয়।
এমতাবস্থায় আদালতের নির্দেশনায় চলতি বছর ইয়ার্ডটির লিজ নবায়ন বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। সবশেষে আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ পেয়ে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহাদাত হোসেন।
অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাজাহারুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম। দুপুর ২টায় শুরু হওয়া অভিযানে স্কেবেটর দিয়ে ভবনটির উত্তর ও দক্ষিণ অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। তবে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় পুরোপুরি গুঁড়িয়ে না দিয়ে এ দিনের মতো অভিযান স্থগিত করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা কোহিনুর স্টিল শিপইয়ার্ডে এসে দেখতে পাই এখানে সমুদ্র সিকস্তি ভূমিতে সুবিশাল ভবন নির্মাণ করেছে। এটি আমাদের লিজের শর্ত পরিপন্থী। তাই আমরা উচ্ছেদ শুরু করেছি। কিন্তু তাৎক্ষণিক অভিযানে আসায় পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও জনবল আনতে পারিনি আমরা। এখানকার স্থাপনাগুলো খুবই শক্ত হওয়ায় আরও ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে কয়েকদিনের মধ্যে পুরো ইয়ার্ডটি উচ্ছেদ করা হবে।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ