শতভাগ রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য উৎস আয়করকে চূড়ান্ত করদায় হিসাবে আগামী ৫ (পাঁচ) অর্থবছরের জন্য ০.৫০ শতাংশ হারে নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। পাশাপাশি এ শিল্পের জন্য বর্তমানে আরোপকৃত কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২% এবং গ্রিন কারখানার জন্য ১০% হারে কমপক্ষে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত বলবৎ রাখার প্রস্তাব রাখছি। এছাড়া রপ্তানির বিপরীতে প্রদত্ত নগদ সহায়তার উপরে আয়কর কর্তনের হার ১০% সম্পূর্ণ রহিত করার দাবি জানাই। কারণ নগদ সহায়তা কোন প্রতিষ্ঠানের আয় নয়। এটি সরকার প্রদত্ত ঋণ। তাই সহায়তার অর্থের ওপর আয়কর কর্তনের কোন বাস্তব যৌক্তিকতা নেই। আসন্ন বাজেট (২০২৩-২০২৪) প্রসঙ্গে পূর্বকোণ প্রতিনিধির সঙ্গে ‘বাজেট ভাবনা’ নিয়ে আলোচনায় নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি ও ফোর এইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাওহার সিরাজ জামিল এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কাঁচামাল এসেসমেন্টের সময় কর আরোপকালে অগ্রহণযোগ্য খরচ ও অন্যান্য আয়ের ক্ষেত্রে একই কর্পোরেট ট্যাক্স হার প্রয়োগ করার এবং গ্রিন কারখানার জন্য ১০% হারে কর আরোপ করার প্রস্তাব করছি।
প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিষয়ে গাওহার সিরাজ জামিল বলেন, অর্থ আইন ২০২০ এর ধারা ৫২ (৬) সংশোধন করে কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের ন্যূনতম ১ শতাংশ, ২ শতাংশ, ৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ করলে উক্ত করদাতাকে প্রদেয় করের যথাক্রমে ২, ৩ ও ৪ শতাংশ কর রেয়াত প্রদান করা প্রয়োজন। এছাড়া শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহকে শূন্য ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্য-বাধকতা থেকে অব্যাহতি দেয়া। পাশাপাশি এ শিল্পের রপ্তানি ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ১০০% ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া প্রয়োজন।
বন্ডেড ওয়্যারহাউজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসআরও নং- ১৪০-আইন/২০২১/১৩৭-মূসক, তারিখ- ৩ জুন ২০২১ এর ৮ নং অনুচ্ছেদের মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা ২০১৬ এ নতুনবিধি ১৮(খ) ও ১৮(গ) এর অধীন ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্র খোলার জন্য রপ্তানিকারক ও প্রচ্ছন্নকারকের বন্ডেড ওয়্যারহাউজ বা স্পেশাল বন্ডেড ওয়্যার হাউজ থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত করে সংশ্লিষ্ট বিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন করা।
এছাড়া এসআরও নং ১১৩-আইন/২০২১/০২/কাস্টমস অনুসারে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিভাগীয় ভ্যাট অফিস থেকে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার বিধান রহিত করা। একই সাথে এসআরও এর ৫ ও ৬ নং শর্ত অনুসারে পণ্য স্থাপনে সংশ্লিষ্ট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল বা ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ স্বাপেক্ষে অঙ্গীকার ফেরত প্রদান করার বিধান রহিত করা প্রয়োজন।
কারখানার জ্বালানি প্রসঙ্গে গাওহার সিরাজ জামিল বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে এবং বর্তমান বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট বিবেচনায় নিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিশক্তি জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে সোলার প্যানেল এবং ১০ কিলোওয়াটের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার ইনভার্টার আমদানির ক্ষেত্রে সকল প্রকার শুল্ক অব্যাহতির প্রস্তাব করছি। এছাড়া ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপনের জন্য আমদানিকৃত রাসায়নিকের শুল্ক ও মূসক ০% রাখার সুপারিশ করছি।
পূর্বকোণ/এ