চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

দুই শ্রমিক সংগঠনের দ্বন্দ্বে অস্থিরতা কেরানিহাটে

অটোরিকশা থেকে মাসে সাড়ে ৪ লাখ টাকার চাঁদাবাজি

ইকবাল মুন্না, সাতকানিয়া

২২ মে, ২০২৩ | ৬:৩১ অপরাহ্ণ

উপজেলার কেরানিহাট একটি ব্যবসায়িক ব্যস্ততম এলাকা। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে হাট-বাজার ও শপিং মল থেকে কেনাকাটা করতে।

তবে গত কয়েক মাসের সিএনজি চালক-মালিক সমিতির মধ্যে চাঁদা আদায় নিয়ে ঘটেছে ছোট-বড় কয়েকটি ঘটনা। এতে আতঙ্কিত হয়ে ক্রেতারা ছাড়ছেন কেরানীহাট বাজার থেকে কেনাকাটা। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় নামছে ধস।

জানা যায়, কেরানীহাট হযরত কালু শাহ (রহ.) সিএনজি ফোর স্ট্রোক চালক বহুমুখী সমবায় সমিতি ও উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী মোটরচালক লীগ নামে দুইটি সংগঠন সিএনজি চালকদের নেতৃত্বে আছে। কালু শাহ সমবায় সমিতিতে নিয়মিত কলঘর বান্দরবান, বাজালিয়া রুটে ৫ শ’র অধিক সিএনজি চলাচল করে। আর এই প্রতি সিএনজি থেকে দৈনিক ২৫ টাকা করে মাসে আদায় করা হয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী মোটরচালক লীগ সংগঠনের ব্যনারে রয়েছে ১৫০টি সিএনজি, যেখান থেকে দৈনিক ১৫ টাকা করে মাসিক আদায় হয় ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু এসব টাকা সংগঠনের সদস্যদের কল্যাণে খরচ করার কথা থাকলেও, তা পুরোপুরি অমান্য করে চলে যাচ্ছে নেতাদের পকেটে।

এদিকে সিএনজি চালকরা জানান, কেরানীহাট দুই শ্রমিক সংগঠনের দ্বন্দ্বে আমাদের সিএনজি চালানো ছেড়ে দিতে হবে। সংগঠনের ভাগ বাটোরোয়া নিয়ে মারামারি আর হামলার স্বীকার হচ্ছি আমরা।

তথ্য মতে, গত ১২ মে উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী মোটরচালক লীগ ও কেরানীহাট হযরত কালু শাহ (রহ.) সিএনজি ফোর স্ট্রোক চালক বহুমুখী সমবায় সমিতির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৭ জন আহত হয় এবং জিটিভির ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। এর আগে গত ১০ মার্চ সিএনজি সমিতি দখল নিয়ে কালু শাহ (রা.) সমিতির উপর হামলা হয়। এর প্রতিবাদে মানববন্ধনও অনুষ্ঠিত হয়।

এ বিষয়ে উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী মোটরচালক লীগের সভাপতি মো. আকতার হোসেন বলেন, আমি শ্রমিকদের পাশে থাকতে কেরানিহাটে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি হযরত কালু শাহ (রহ.) সিএনজি ফোর স্ট্রোক চালক বহুমুখী সমবায় সমিতির নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে কুপিয়েছে ও সিএনজি চালকদের মারধর করছে। তিনি বলেন, আমার সংগঠনে কোন প্রকার চাঁদা আদায় হয়না। আমি নিজের পকেট থেকে দিয়ে সংগঠন চালাই।

অপরদিকে, কেরানীহাট হযরত কালু শাহ (রহ.) সিএনজি ফোর স্ট্রোক চালক বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানে আলম বলেন, আমাদের সংগঠন বৈধ রেজিস্ট্রেশনভুক্ত সংগঠন। আমরা চালক সমিতি চালকদের অধিকার আদায়ে কাজ করি। মূলত উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী মোটরচালক লীগের নেতারা আমাদের কাছ থেকে ২ লাখ চাঁদা দাবি করেছিল, আর সেটা দিতে নারাজ হওয়ায় আমাদের সিএনজি শ্রমিকদের উপর হামলা, মালিক সমিতির অফিস ভাঙচুর, লেগুনা এবং সিএনজি ভাঙচুর করা হয়।

এ বিষয়ে কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, সিএনজি সমিতির দু’পক্ষের মারামারিতে আমাদের ব্যবসা খাতে প্রভাব পড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা মার্কেটে আসতে ভয় পাচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসনসহ তারা দু’পক্ষ বসে একটি সমাধান করুক।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান বলেন, সিএনজি চালক সমিতি নাম দিয়ে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই বিষয়ে পুলিশ সবসময় তৎপর আছে।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট