বেইলি সেতু থেকে কনক্রিট সেতুর যুগে প্রবেশ করছে তিন পার্বত্যজেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। তিন জেলায় ৩৭টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের ২৭ টি বেইলি সেতুর মধ্যে পাঁচটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ১০টি ব্রিজ-কালাভার্ট কর্মসূচির তালিকাভুক্তের প্রস্তাব দিয়েছে সড়ক ও জনপথ। ছয়টি বেইলি সেতুর মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষা চলছে। তিন পার্বত্য জেলায় ১০টি বেইলি সেতুকে কনক্রিটের সেতুতে (পিসি গার্ডার) রূপান্তর করা হবে চলতি অর্থ বছরে।
এছাড়া চট্টগ্রাম জোনের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং দোহাজারী সড়ক বিভাগের আওতাধীন আরো তিনটি সেতু নির্মাণ করা হবে চলতি অর্থ বছরে। এরমধ্যে তিন পার্বত্যজেলার ১০ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে নয় হাজার নয়’শ পাঁচ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বাকি তিনটি সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৭শ’ ৭৩ কোটি টাকা। তবে বান্দরবান-রুমা-থানচি সড়কের ৬৩ ঝুঁকিপুর্ণ বেইলি সেতু আপাতত কনক্রিটের হচ্ছে না। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের গত জুলাই মাসের মাসিক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব এ.বি.এম আমিন উল্লাহ নুরী।
তিন পার্বত্যজেলায় নির্মিত হবে ১০ সেতু :
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারজানা জেসমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০২২-২০২৩) পিএমপি (মেজর-সেতু/কালভার্ট) কর্মসূচির আওতাধীন রাঙামাটি-বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে ১০টি বেইলি সেতু কনক্রিট সেতুতে রূপান্তর করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। যেসব স্থানে বেইলি সেতু সরিয়ে কনক্রিটের সেতু নির্মাণ করা হবে তা হলো-খাগড়ছাড়ির দিঘীনালা-বাঘাইছড়ি সাজেক সড়কের জামতলি সেতু, রাঙামাটি-মানিকছড়ি-মহালছড়ি সড়কের তোই চাকমা সেতু, সোনাছড়ি সেতু, বগাছড়ি সেতু, কেঙ্গালছড়ি সেতু, বান্দরবানের চিরিঙ্গা-(ফাসিয়াখালি) লামা-আলিকদম সড়কের ইয়াংছা সেতু, রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কের কলাতলী সেতু, বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি-আলিকদম বাইশারী-নাইক্ষংছড়ি-ঘুনধুম সড়কের বিজিবি সেতু ও আজিজনগর -গজালিয়া-লামা সড়কের কাট্টলীপাড়া সেতু।
১০ সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে নয় হাজার নয়’শ পাঁচ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সবগুলো বেইলি সেতুকে পিসি গার্ডার সেতুতে রূপান্তর করা হবে চলতি অর্থ বছরে (২০২২-২০২৩)। এছাড়া চট্টগ্রাম-রাঙামাটি জাতীয় মহাসড়কের বালুছড়া সেতুকে আরসিসি, কক্সবাজারের হ্নীলার ওয়াপ্রাং সেতুকে পিসি গার্ডার এবং পটিয়া- বোয়ালখালী-কানুনগোপাড়া জেলা মহাসড়কের খানমোহনা সেতুকে আরসিসি সেতুতে রূপান্তর করা হবে। এ তিনটি সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৭’শ ৭৩ কোটি টাকা।
কনক্রিট সেতুতে রূপান্তর ৫ বেইলি সেতু : গত ২৯ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নীলিমা আফরোজ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বান্দরবান-রাঙামটি সড়কে ২৭টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে। গত অর্থবছরে (২০২০-২০২১) পিএমপি ব্রিজ কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ১১টির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। পাঁচটি বেইলি ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ১০টি বেইলি ব্রিজ পিএমপি ব্রিজ কালভার্ট কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত করতে প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকি ছয়টির মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষার কাজ চলছে। বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের ২৭ বেইলি সেতুকে কনক্রিট সেতুতে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেয়া হলেও বান্দরবান- থানচি এবং বান্দরবান -রুমা সড়কের ঝুঁকিপুর্ণ বেইলি সেতু কনক্রিট সেতুতে রূপান্তরের বিষয়টি এখনো আলোচনায় আসেনি। বৈঠকে বলা হয়েছে, বান্দরবান-থানচি এবং বান্দরবানের ওয়াই জংশন থেকে রুমা সড়কে ৬৩ বেইলি সেতু রয়েছে। সড়ক দুটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রক্ষণাবেক্ষণ করছে।
পূর্বকোণ/আর