চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

হাতের চর্মরোগ : হ্যান্ড ডারমাটাইটিস

২২ আগস্ট, ২০২১ | ১:৪৯ অপরাহ্ণ

হাতের ডারমাটাইটিস একপ্রকারের তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী একজিমা। যুবতী মহিলারা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। যাদের এটোপির ইতিহাস, পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবন-যাপনে নানা কেমিক্যাল, পানি ও ধাতব বস্তু ক্রমাগত ধরে থাকে তাদের এটি বেশি হতে পারে। অজানা কারণ, বংশগত, আঘাত বা ক্ষত, ইমুনো-বিক্রিয়ার পাশাপাশি অনান্য কিছু রোগের যেমন, সোরিয়াসিস এর সম্পৃক্ততা এতে থাকতে পারে।

হাতের আঙুল, তালু কিংবা পেছনের যে কোনো অংশে রোগটি হতে পারে। মারাত্বক চুলকানি, জ্বালাপোড়া ও ব্যথা থাকতে পারে। প্রকারভেদে এর লক্ষণ-উপসর্গে একটু ভিন্নতা দেখা যায়। তীব্র একজিমায় লাল বিচি, চাক, ফুসকুড়ি, ফোসকা, ফোলাভাব, রস বের হওয়াসহ চাঁট ও হাতের চামড়া ফেটে গিয়ে ক্ষত হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী বা ক্রমাগত হতে থাকলে ত্বক শুকনা, খোসাযুক্ত ও মোটা হয়ে যায়। এটোপিক একজিমায় হাতের পেছনে কিংবা কব্জিতে গোলাকার ফুসকুড়ি যুক্ত চিহ্ন দেখা যায়। এক্ষেত্রে শরীরের অনান্য স্থানেও এটোপিক একজিমার চিহ্ন থাকে। ডিসকয়েড প্রকৃতিতে তালু বা আঙুলের পেছনের দিকে গোলাকার চিত্র থাকে। শরীরের অন্যান্য অংশে মাঝেমধ্যে দেখা দিতে পারে। পম্ফোলিক্স জাতীয় হাতের একজিমায় সাগু দানার মত বিচি তীব্র চুলকানিতে ফুসকুড়িতে পরিণত হয়। হাত ছাড়াও পায়ের তালু ও আঙুলে এটি দেখা যায়। অতিরিক্ত ঘাম, আদ্রতা, গরম আবহাওয়া এবং মানসিক চাপ এটির কারণ বলে ধারণা করা হয়। বারবার হয় এমন এই পম্ফোলিক্স একজিমাটি পরবর্তীতে খসখসে ফাটাফাটা হয়ে যেতে পারে। একটু কম লালচে হাতের তালুর হাইপারকেরাটোটিক একজিমা মোটা হয়ে দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়। ফিংগার টিপ একজিমাতে আঙুলের মাথা খসখসে ফাটাফাটা হয়ে যায়। এছাড়াও রয়েছে ইরিট্যান্ট বা এলার্জিক কোনো কিছুর স্পর্শ জনিত হাতের একজিমা। ইরিট্যান্টের প্রকার অনুযায়ী হাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় চামড়ায় ছিলাভাবসহ ঘা দেখা দেয়। হাতে এলার্জিক দ্রব্য স্পর্শের কিছুকাল পর হতে প্রতিক্রিয়া শুরু হতে থাকে, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে বিস্তৃত হতে পারে। যে কোনো প্রকারেই নানা ব্যাকটেরিয়ার সুযোগ-সন্ধানী সংক্রমণে নখের বিকৃতিসহ বিস্তার দেখা যায়। সাধারণত, চোখে দেখেই রোগটি নির্ণীত হতে পারে। তবে ঔষধ শুরুর আগে কিংবা অনান্য একই রকমের কিছু রোগ যেমন- স্পর্শ এলার্জি, সোরিয়াসিস বা ছত্রাক জনিত চর্মরোগ নির্ধারণের জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হয়।

প্রতিরোধক ব্যবস্থার প্রথমেই যে কারণগুলো এড়ানো সম্ভব তা এড়িয়ে চলতে হবে। যে দ্রব্য স্পর্শে প্রতিক্রিয়া হয় তা থেকে দূরে বা ব্যবহার কমাতে হবে। সাবান নয় এমন কিছু দিয়ে হাত ধোয়াসহ প্রয়োজনে গ্লাভস পরা দরকার। নিয়মিত ইমোলিয়েন্ট বা ভ্যাসলিন লাগাতে হবে। প্রতিকারক চিকিৎসায় স্থানীয়ভাবে স্টেরয়েড, ক্যালসিনিউরিন ইনহেবিটার ইত্যাদি দেওয়া হয়। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে কিংবা মারাত্নক অবস্থায় মুখে খাবার এন্টিবায়টিক ও স্টেরয়েড দেওয়া যেতে পারে।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট