চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

অবহেলিত বীর, যত্নে বিশ্বাসঘাতক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ জুন, ২০১৯ | ৭:৫৮ অপরাহ্ণ

বাংলার স্বাধীনতা রক্ষায় বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আততায়ীর হাতে যিনি প্রাণ হারান সেই নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হচ্ছে না । চরম অবহেলা ও অযত্নে রয়েছে তাঁর সমাধিস্থল। অন্যদিকে নবাবের জীবনের করুণ পরিণতির পেছনে মূল কলকাঠি নাড়া ব্রিটিশদের সঙ্গে আঁতাত করা বিশ্বাসঘাতক সিপাহসালার মীর জাফর, তার তিন স্ত্রী ও বংশধরদের কবরস্থান রয়েছে বেশ সংরক্ষিত অবস্থায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের অবহেলার কারণেই এমন বৈষম্য চোখে পড়ছে।

ইতিহাসের ঘৃণিত ব্যক্তি মীর জাফর ১৭৫৭ সালে ইংরেজদের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে ক্ষমতায় আসেন। তার মৃত্যুর পর তিন স্ত্রী ও ১১০০ বংশধরকে মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে কবর দেয়া হয়। তাদের কবরস্থানটি অত্যন্ত সুরক্ষিত। দর্শনার্থীদের ভারতীয় ১৫ রুপি টিকিট কেটে সেখানে প্রবেশ করতে হয়। ফটকটি যথেষ্ট সুরক্ষিত। সেখানে পারিবারিকভাবে সার্বক্ষণিক দেখভাল ও নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে লোকজন।

অন্যদিকে সিরাজউদ্দৌলা ও তার নানা আলীবর্দি খাঁসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সমাধিস্থল অনেকটাই অবহেলিত ও অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। দেখাশোনার কোনো লোকজন না থাকায় সেখানে প্রবেশের দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে শ্রীহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সিরাজউদ্দৌলার সমাধি দেখতে যাওয়ার জন্য ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। এখনো নৌকায় ভাগীরথী নদী পার হয়ে সেখানে যেতে হয়। তবে সিরাজের সমাধিস্থলে প্রবেশে কোনো টিকিট কাটতে হয় না। সেখানকার গাইডদের ৪০ থেকে ১০০ টাকা দিয়েই বিস্তারিত ইতিহাস জানতে পারেন দর্শনার্থীরা।

শুধু তাই নয়, মুর্শিদাবাদের জাফরাগঞ্জে সিরাজউদ্দৌলাকে যে স্থানে হত্যা করা হয়, সেটিরও বেহাল অবস্থা। সেখানকার প্রধান ফটক পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। কোনো তত্ত্বাবধায়ক বা নিরাপত্তারক্ষী নেই। শুধু একটি সাইনবোর্ডে ‘প্রবেশ নিষেধ’ লেখার মধ্যেই যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ।

অবশ্য সিরাজউদ্দৌলা যে স্থান থেকে সৈন্যবাহিনী নিয়ে পলাশির প্রান্তরে ইংরেজদের পরাস্ত করার যাত্রা শুরু করেছিলেন, ঐতিহাসিক সেই মতিঝিল পার্ককে একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করেছে ভারত সরকার। সেখানে ঐতিহাসিক বিভিন্ন ঘটনা উপস্থাপনের পাশাপাশি সুরের মূর্ছনার মাধ্যমে পলাশির যুদ্ধ ও সেই ইতিহাসের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন