চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

গরুর মাংসের উপকারিতা ও অপকারিতা

অনলাইন ডেস্ক

২৯ জুন, ২০২৩ | ৯:৪৭ অপরাহ্ণ

ঈদুল আজহায় গরু কিংবা খাসি কোরবানি করা হয়। আত্মীয়-পরিজন ও দরিদ্রদের ভাগ দিয়ে নিজেদের জন্যও থাকে মাংসের এক ভাগ। কোরবানির মাংস দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু অনেক খাবার। সেসব খাবার থেকে লোভ সামলে রাখা মুশকিল। অনেকে ক্ষতিকর মনে করে গরুর মাংস খেতে ভয় পান।

আসলেই কি গরুর মাংস ক্ষতিকর? গরুর মাংসে আছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি পুষ্টি উপাদান। সেগুলো হলো প্রোটিন, জিঙ্ক, ভিটামিন বি১২, সেলেনিয়াম, আয়রন, রিবোফ্লেভিন, ফসফরাস, নায়াসিন এবং ভিটামিন বি৬। উপকারিতার পাশাপাশি গরুর মাংসের আছে কিছু ক্ষতিকর দিকও। জেনে নিন গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-

গরুর মাংসের উপকারিতা

শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়ক: গরুর মাংস খেলে তা আমাদের বুদ্ধি-বৃত্তিক গঠন, শারীরিক বর্ধন ও রক্ত বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে ৯-১৩ বছর বয়সী শিশুর দৈনিক চাহিদার ১২৫ শতাংশ ভিটামিন বি১২, ৯০ শতাংশ প্রোটিন, ৩২ শতাংশ আয়রন, ২৯ শতাংশ নায়াসিন, ৭৪ শতাংশ জিঙ্ক, ৪২ শতাংশ সেলেনিয়াম, ৩২ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ২৩ শতাংশ রিবোফ্লেভিন এবং ১৬ শতাংশ ফসফরাস থাকে।

খনিজের অভাব দূর করে: শরীরে খনিজের অভাবে সৃষ্ট অসুখ-বিসুখ দূর করতে কাজ করে গরুর মাংস। কারণ এটি খনিজ লবণের দুর্দান্ত উৎস। গরুর মাংসে থাকে জিংক, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং প্রচুর লৌহ। এই মাংস ভিটামিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। গরুর মাংস ভিটামিন বি-৩, বি-৬, বি-১২ ইত্যাদি ভিটামিনের জোগান দেয়।

প্রোটিনের ভালো উৎস: গরুর মাংস প্রোটিনের ভালো উৎস। মাংস ছাড়াও হাড়, কলিজা, মগজ ইত্যাদি থেকে মেলে প্রোটিন। এই প্রোটিন থেকে পাওয়া অ্যামাইনো এসিড কাজে লাগে হাড় ও মাংসপেশি ভালো রাখতে। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে পাওয়া যায় ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন।

জিংকের ঘাটতি দূর করে: আমাদের সুস্থতার জন্য জিংক একটি জরুরি উপাদান। এটি আমাদের শরীরের কোষ ভালো রাখে এবং বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ৮৫ গ্রাম গরুর মাংস খেলে তা দৈনিক জিংকের ৩৯ শতাংশ পূরণ করে।

গরুর মাংসের অপকারিতা

কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বাড়ায়: অনেকে অতিরিক্ত গরুর মাংস খেয়ে ফেলেন। এতে বাড়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরবর্তীতে আরও বড় অসুখ দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গরুর মাংসের সঙ্গে নানা ধরনের সবজি মিলিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যাবে।

কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি: অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া মোটেও উপকারী নয়। তাই খেতে যতই ভালো লাগুক, গরুর মাংস খেতে হবে পরিমিত। চিকিৎসকদের মতে, সপ্তাহে পাঁচ বেলা গরু, খাসি কিংবা ভেড়ার মাংস খেলে বাড়ে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। সেইসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস খেলে তা মৃত্যু ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি: আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, গরুর মাংস খেলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। কারণ এতে থাকা অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ রক্তচাপ সৃষ্টিতে বা বাড়াতে কাজ করে সোডিয়াম। তাই গরুর মাংস খেলে হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ। সেখান থেকে দেখা দেয় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা।

যতটুকু গরুর মাংস খেতে পারবেন: দৈনিক গরুর মাংস খেতে পারবেন ৮৫ গ্রাম। ৮৫ গ্রাম চর্বি ছাড়া গরুর মাংস খেলে তা আপনার দৈনিক ক্যালোরির চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করবে। রান্না করা ৩ টুকরা মাংসে ৮৫ গ্রাম হয়, তাই চেষ্টা করুন দিনে ৩ টুকরার বেশি মাংস না খেতে। যদি একবারে আরও বেশি মাংস খেয়ে ফেলার ভয় থাকে তবে সপ্তাহে দুইদিনের বেশি গরুর মাংস না খাওয়াই ভালো।

পূর্বকোণ/সাফা

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট