কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার হালকাকারা এলাকার মৌলভীরচরে একটি বসতঘরে আগুন লেগে এক ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ মে) দিবাগত রাত একটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম ওসমা মনি (৭)। সে হালকাকারা এলাকার মৌলভীরচরের বাসিন্দা সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ ওসমানের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, মৌলভীরচরের মো. বাহাদুর মিস্ত্রির বসতঘরে দক্ষিণ কোনায় অবস্থিত চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এই ঘরটিতে বাহাদুর মিস্ত্রি, তার ভাই মোহাম্মদ ওসমান ও মোহাম্মদ মিজান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকতেন। আগুন লাগার ১০ মিনিটের মধ্যে লেলিহান শিখা বসতঘরের সবপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে অঙ্গার হয় ওসমানের সাত বছরের মেয়ে ওসমা মনি।
চকরিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রেজাউল করিম বলেন, বসতঘরটি বেড়া দিয়ে টিনের ছাউনি হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের সময় ওসমা মনি তার চাচির সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। আগুনের তীব্রতায় চাচি তার শিশু সন্তান নিয়ে বের হয়ে এলেও ভুলে যান ওসমা মনির কথা। এতে আগুনে পুড়ে ওসমা মনির শরীরের ৮০ ভাগ ছাই হয়ে যায়।
পুড়ে মারা যাওয়া ওসমা মনির মা শাহিনা আকতার বলেন, তার দুই ছেলে, এক মেয়ে। ১০ বছরের বড় ছেলে ও ২২ মাসের ছোট ছেলে তার সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই সন্তান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সাত বছরের একমাত্র মেয়ে ওসমা মনি তার চাচির সঙ্গে ঘুমিয়েছিল।
সবই কপালের লিখন বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহিন আকতার। তিনি বলেন, ‘কপালের লিখন না হলে আমার মেয়ে আমার সঙ্গেই ঘুমাতো।’
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাত সোয়া একটার দিকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তফিকুল আলম ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর স্থানীয় জনতা ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এই আগুনে তিন ভাইয়ের থাকার জায়গার পাশাপাশি একটি শিশু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শিশুটি যেহেতু আরেকঘরে পুড়ে মারা গেছে তাই লাশের ময়নাতদন্ত হবে। ইতিমধ্যে আজ রবিবার সকাল ৭টায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ