চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

লামায় জিম্মি করা সেই সন্তান উদ্ধার, গ্রেপ্তার পিতা

লামা সংবাদদাতা

১৭ এপ্রিল, ২০২৩ | ৩:১২ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের লামায় স্ত্রীর সাথে মতের অমিল ও পারিবারিক অশান্তির জেরে তিন বছরের শিশু মো. সাকিলকে গলায় দা ঠেকিয়ে জিম্মি করা সন্তানকে তার পিতার হাত থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পিতা আজিজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

গ্রেপ্তার হাফিজুল ইসলাম প্রংগ ঝিরি এলাকার ইসহাক গাজীর ছেলে। আজিজুল ইসলাম ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের ড্রাইভার। গজালিয়া ইউনিয়নের ডিসি রোড এলাকায় তার একটি চা দোকান রয়েছে।

 

সোমবার (১৬ এপ্রিল) রাতে গজালিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রংগ ঝিরি এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।

 

শিশুটির মা কুলছুমা আক্তার জানায়, গত দুইদিন ধরে তার স্বামী হাফিজুল শিশুটিকে তার কাছে জিম্মি করেছে। কেউ তার কাছে গেলে তাকে দা, ছুরি, কোদাল ও রড দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। রবিবার সকালে দুইজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ও বিকেলে দুইজনের ঘর কেটে ফেলে। এমনকি আমার শিশুটিকে গত দুইদিন কিছু খেতে দেয়নি এবং দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। সাকিলের মাথা ও কপালে দা দিয়ে আঘাত করায় রক্ত ঝরছে। অসহায় এই মা আহাজারি করে আরও বলেন, আপনারা আমার সন্তানকে আমার কোলে ফিরিয়ে দেন।

 

পাষণ্ড হাফিজুল ইসলামের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে আমার ভাবী ও ভাতিজাদের মারধরের বিষয়ে বলায় সে আমার ঘর কুপিয়ে কেটে ফেলেছে। হাফিজুল সবসময় হাতে দা নিয়ে ঘোরাফেরা করে। তার কাছে এলাকার কেউ নিরাপদ না এবং সে কাউকে মানে না। এমনকি আমার বাবা ইসহাক গাজীকেও সে মারধর করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও জনতা এই উচ্ছৃঙ্খল হাফিজুলের বিচার দাবি করেছে।

 

ফায়ার সার্ভিস টিমের দলনেতা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, এমন পাষণ্ড বাবা দেখিনি। নিজের সন্তানকে কুপিয়ে আহত করে আবার জিম্মি করেছে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টার পর বাচ্চাটিতে অক্ষত উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

 

গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি মো. মফিজ বলেন, রবিবার দিনের বেলায় মুন্নী রাণী সাহা (২৫) ও সুমন সাহা (৩৮) নামে দুইজনকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত এবং রথিচন্দ্র ত্রিপুরা ও শফিকুল ইসলামের ঘর কুপিয়ে কেটে ফেলার বিষয় জানতে পেরে আমরা সন্ধ্যায় প্রংগ ঝিরিতে আসি। স্থানীয় জনতা ও পুলিশ আসতে দেখে হাফিজুল ইসলাম তার তিন বছরের শিশু সাকিলের গলায় দা ঠেকিয়ে জিম্মি করে তার বাবা ঘরের ছাদে উঠে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ আমরা অনেক চেষ্টা করে তার কাছ রক্তাক্ত বাচ্চাটি উদ্ধার করতে না পেরে লামা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। রাত সাড়ে ১০টায় ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনতা ও আমরা যৌথ চেষ্টা চালিয়ে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পরে জিম্মিদশা থেকে বাচ্চাটি উদ্ধার করি এবং পাষণ্ড পিতা হাফিজুল ইসলামকে আটক করে গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাই। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

পূর্বকোণ/পিআর/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট