চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মানসিক সমস্যায় ভুগছেন আহতরা

ইমাম হোসাইন রাজু

৭ মার্চ, ২০২৩ | ১২:৩৫ অপরাহ্ণ

মো. ফোরকান, বিস্ফোরণ হওয়া সীমা অক্সিজেন কারখানায় প্রায় ১৬ বছর ধরে চাকরি করছেন তিনি। বিস্ফোরণে আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ফোরকান। শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে হলেও তাঁর ভিতরে মানসিক অস্বাবিকতা রয়ে গেছে।

 

ফোরকানের ভাই আইনুল হোসেন বলেন, ‘কোন শব্দ শুনলে আঁতকে ওঠেন তিনি। ঘুমাতে গেলেও মনে করেন আবার বিস্ফোরণ ঘটবে। তার মনে সবসময় ভয় ভয় কাজ করে। মনে হয় সব কিছু আবার ভেঙে পড়বে।’

 

শুধু ফোরকানের ক্ষেত্রেই নয়, ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে নতুন করে ভর্তি হওয়া লোকমানের পরিস্থিতিও একই। লোকমান বলেন, ‘মনে হয় এইতো আবার বিকট শব্দ হচ্ছে। এখন ছোট কোন শব্দও কানে আসলে ভয় লাগে। ঘুমটাও ঠিক মতো হয় না।’

 

চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন, সীমা অক্সিজেন কারখানায় আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের সিংহভাগই একই পরিস্থিতে ভুগছেন। তাদের শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি মানসিকভাবেও সমস্যায় পড়েছেন। তবে তাঁদের মানসিকভাবে সুস্থ হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘চোখের সামনে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সবারই মানসিকভাবে একটু আতঙ্ক কাজ করে। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরার পর তাদের স্বাভাবিক হতে একটু সময় প্রয়োজন। চমেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসার কোন কমতি নেই। সবার শরীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সেবাও নিশ্চিত করা হবে।’

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চমেক হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও তিনজনের চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। বাকিদের মধ্যে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত রয়েছে। তবে তাদের সেরে ওঠতে আরও কিছুদিন সময়ের প্রয়োজন হবে বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

 

বাড়ি ফিরলেন দু’জন, নতুন ভর্তি একজন : বিস্ফোরণে আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দুইজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। গতকাল (সোমবার) ক্যাজুয়ালিটি ও অর্থপেডিক্স ওয়ার্ড থেকে তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়। এ দু’জনের শরীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

 

অন্যদিকে, দু’জনকে ছাড়পত্র দেয়া হলেও দুর্ঘটনায় মাথায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়া মো. লোকমান নামে আরও একজন নতুন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

লোকমান বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়ে প্রথমে সীতাকুণ্ডের বিএসবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করা হলেও গতকাল (সোমবার) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন চমেক হাসপাতালে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের দায়িত্বে থাকা এএসআই আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘নতুন করে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’

পূর্বকোণ/একে

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট