২ মার্চ, ২০২৩ | ১:৩১ অপরাহ্ণ
পূজন সেন
পাকবাহিনীর প্রথম আঘাতের প্রতিরোধ হয়েছিল কালুরঘাটে। ’৭১ সালের ২৫ মার্চের পরদিন থেকেই ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পাক বাহিনীকে বেসামাল করে দিয়েছিলো এ প্রতিরোধ যুদ্ধ। কালুরঘাটের দুইপাড় পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মানস কুসুম রায় বলেন, ‘৭১ সালের ২০ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে শাকপুরা গ্রামে পাক আর্মির চারটি গ্রুপ হানা দেয়। সাথে ছিল এদেশীয় দোসররা। পাক আর্মিরা গ্রামের মেয়েদের ধর্ষণ করে, চালায় লুটপাট। হত্যা করে গ্রামের বিভিন্ন বয়সের দেড়শতাধিক মানুষকে। ওইদিন পাক আর্মির হাতে অসংখ্য নারীর সাথে নির্যাতিত হয়েছিল আমার ছোট বোনটিও। বাড়িতে ফিরে মানুষের আর্তনাদ আর আহাজারি শুনে স্থির থাকতে পারিনি। যুদ্ধ করা অনিবার্য হয়ে উঠে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে’- বলেন মানস কুসুম রায়। এরপর বোয়ালখালীতে সক্রিয় কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপের সাথে যোগাযোগ রেখে চালিয়ে যেতে থাকের কর্ম তৎপরতা। তিনি বলেন, জুনে পরিকল্পনা হয় থানা অপারেশনের। এতে আমার দায়িত্ব পরে আক্রমণের আগে রেকির। সেইদিন থানায় ২০-২৫ জন পুলিশ ও রাজাকাররা অবস্থান করছিলো। রাত ১২টার দিকে ক্যাপ্টেন করিম, আবুল হোসেন, সুনীল চক্রবর্ত্তী, আবুল হাসানসহ প্রায় ১০০ জন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা এ অপারেশনে অংশ নিই। তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়েই আক্রমণ করা হয় থানা। ত্রিমুখী হামলার তোড়ে অবাঙালি পুলিশ অস্ত্র গোলাবারুদ ফেলে পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রগুলো আমাদের রসদ যোগায়।
৭৪ বয়সী এ বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশের সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে চাকুরি করেছেন। তিনি রেলওয়েতে আরএনবির চিফ কমান্ডেন্ট পদে দীর্ঘসময় সৎ ও ন্যায়ের সাথে চাকুরি করেন। ২০০৮ সালে নেন অবসর। তাঁর স্ত্রী, চার মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
পূর্বকোণ/একে