চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কর্ণফুলীতে ডেইরি বিপ্লব

নিজস্ব সংবাদদাতা

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

কর্ণফুলী উপজেলার মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী প্রকাশ নেভী হারুন ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ডেইরি ফার্ম ও গরুর ঘাস উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। শিকলবাহায় নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন শাহনাজ ডেইরি ফার্ম নামে একটি ডেইরি খামার। ডেইরি খামারে বর্তমানে ছোট-বড় ৮০টি উন্নত জাতের গরু রয়েছে। শুরুর দিকে এলাকার অনেকে তাকে নিরুৎসাহিত করতে চাইলেও পিছপা হননি তিনি। এলাকার মানুষের ধারণা ভুল প্রমাণিত করে তিনি ঘাস চাষ ও ডেইরি শিল্পে অসামান্য অবদান রাখায় অর্জন করেন দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক’। তাঁর দেখাদেখি কর্ণফুলী এখন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেইরি জোনে। কর্ণফুলীর উৎপাদিত দুধ চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাণিজ প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ডেইরি খামারের মাধ্যমে হাজার হাজার যুবক গুছিয়েছেন বেকারত্ব।

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১২০০ এর অধিক খামারে প্রতিদিন ৬০ হাজার লিটারের অধিক দুধ উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত এসব দুধের ৭০% ক্রয় করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বড় বড় ও স্বনামধন্য মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। মিল্ক ভিটা প্রতিদিন ৬-৭ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করে থাকে। বাকি দুধ সকাল-বিকাল চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন বাসা বাড়িতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এখানে হাজার হাজার পরিবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদ এর উপর নির্ভরশীল। কর্ণফুলীতে দুইজন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত খামারি আছেন। একজন নাজিম উদ্দিন হায়দার, অন্যজন হলেন মো. হারুন চৌধুরী যিনি নেভি হারুন নামে সমধিক পরিচিত। কর্ণফুলী ডেইরি জোনকে ভিত্তি করে অন্তত ৩টি এনজিও এবং একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা কাজ করছে। করোনা মহামারিতে কর্ণফুলীর প্রায় ১২০০ খামারিকে ১০/২০ হাজার টাকা করে নগদ প্রণোদনা দিয়েছে সরকার।

 

কর্ণফুলীতে অধিকাংশ ডেইরি খামার গড়ে ওঠেছে বাড়িতে বা বাড়ির পাশেই, তা মূলত দেখভাল করছেন গ্রামীণ নারীরা। এতে নারীর যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে, তেমনি নারীর ক্ষমতায়নের পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। ডেইরি খামারকে কেন্দ্র করে কর্ণফুলীতে গড়ে উঠেছে ১৫-২০ টি পশুখাদ্যের দোকান, প্রায় ২৫টি ওষুধের দোকান, যেখানে অনেকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আবার কেউ কেউ দুধ ফেরি করেও জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন শত শত মানুষ সকাল-বিকাল কর্ণফুলী থেকে দুধ নিয়ে শহরের বাসা বাড়িতে সরবরাহ করেন। ঘাস বিক্রি করেও অনেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কর্ণফুলীর অধিকাংশ এলাকা নিচু জমি হওয়ায় ধান তেমন হয় না। বেশিরভাগ জমিতে ঘাস চাষ হচ্ছে। উন্নত জাতের ঘাসের মধ্যে জার্মান ঘাস সবচেয়ে বেশি চাষ হয়, এছাড়া ভুট্টা, পাকচংও চাষ হচ্ছে।  বিশাল সংখ্যক ডেইরি খামারকে কেন্দ্র করে কর্ণফুলীর জ্বালানি খাতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। প্রায় ২৫০টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপিত হয়েছে এই উপজেলায় যা জ্বালানি সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। অধিকন্তু পরিবেশ রক্ষায়ও রাখছে বিশেষ অবদান। একটি ছোট্ট উপজেলায় এতো সংখ্যক বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট খুবই বিরল। এ ছাড়া ডেইরি বজ্যসমূহ সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করে জৈব সার উৎপন্ন করা হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন বয়ে আনবে।

 

কর্ণফুলী উপজেলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেইরি জোনে পরিণত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, নৌবাহিনী থেকে অবসর নেয়ার পর আমেরিকান সাহায্যকারী একটি সংস্থার আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাত্র দুইটি গাভী নিয়ে ডেইরি ফার্ম ও গরুর ঘাস উৎপাদনের কাজ শুরু করি। পাশাপাশি এ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয়ভাবে এলাকার তরুণ সমাজকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি এবং ডেইরি খামার গড়তে উদ্বুদ্ধ করি। কৃত্রিম প্রজননসহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নত মানের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এভাবে চলতে চলতে চার বছরে ডেইরি খামারের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে যায়। কর্ণফুলীর অধিকাংশ এলাকার নিচু পতিত জমি ঘাস চাষে উপযোগী। ফলে গো খাদ্য সহজলভ্য হওয়ায় এবং চট্টগ্রাম শহরে দুধে চাহিদা থাকায় দ্রুত বাড়তে থাকে ডেইরি খামারের সংখ্যা। কর্ণফুলীতে বর্তমানে ডেইরি খামারের সংখ্যা প্রায় ১২শ।’

 

তিনি আরো বলেন, গত আড়াই দশকে আমাদের অনেক সঙ্কট গেছে। প্রতিটি সঙ্কটে আমরা পাশে পেয়েছিলাম দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সাহেবকে। তবে কর্ণফুলীর ডেইরি খামারিদের কিছু সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।’

 

খামারিরা জানান, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় ডেইরি খাদ্যের দাম দিন দিন বাড়ছে। গত এক বছরে গো খাদ্যের বিভিন্ন উপকরণের দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। দুধের উৎপাদন খরচ যে হারে বেড়েছে সে হারে বাড়েনি দুধের দাম। ফলে খামার পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে খামারিদের। অধিকন্তু দুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে মিষ্টি দোকানে দুধের চাহিদা কমে গেলে দুধ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় খামারিদের। এছাড়াও কর্ণফুলীতে প্রচুর পরিমাণে দুধ উৎপন্ন হলেও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন কারখানা গড়ে উঠেনি। ফলে বহুমুখী ব্যবহার না হওয়ায় দুধের চাহিদা সীমিত হয়ে পড়ায় খামারিরা লাভবান হতে পারছে না।

 

খামারিরা আরো জানান, কর্ণফুলীতে ১২শর উপর খামার থাকলেও ভেটেরিনারি সার্জনের পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য হয়ে আছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের নিজস্ব কোন ভবন নেই। বর্তমানে ভাড়া বাড়িতে এ দপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের প্রত্যেক উপজেলায় মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক গাড়ি থাকলেও একমাত্র কর্ণফুলীতে গাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়নি। যার দরুণ খামারিরা পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না।

 

অন্যদিকে, ডেইরি খামারের বর্জ্য কর্ণফুলীর জন্য এক বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে ডেইরি খামারিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ জমা পড়ছে।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ডেইরি খামারের বর্জ্য পরিবেশ নষ্ট করছে, খাল ভরাট করছে। বিশেষত শিকলবাহা খালটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় উদ্যোগে খনন করা হলেও ডেইরি বর্জ্যে খালটি আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বর্জ্যে পচা গলা পানি খালের পাড়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর প্রায় অভিযান চালিয়ে খামারিদের মোটা অংকে অর্থদ- প্রদান করছেন। এতে করে খামারিদের মাঝে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমন তালুকদার বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেইরি জোন হলেও আমাদেরকে সীমিত সামর্থ্যরে মধ্য দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের স্থায়ী দপ্তর নেই। মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক গাড়ি নেই। ভেটেরিনারি সার্জনের পদটি শূন্য হয়ে পড়ে আছে। শূন্য পদটি  পূরণ হলে খামারিরা আরো বেশি সেবা পাবে। তবে করোনা মহামারিতে কর্ণফুলীর প্রায় ১২০০ খামারিকে দশ থেকে ২০ হাজার টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ভ্যাক্সিনসমূহ প্রদান করা হচ্ছে।

 

কর্ণফুলী ডেইরি শিল্পের আরো প্রসারের জন্য কৃত্রিম প্রজননসহ নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমন তালুকদার বলেন, কর্ণফুলীর উৎপাদিত দুধ চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাণিজ প্রোটিনের চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ডেইরি শিল্পের আরো প্রসারের জন্য কৃত্রিম প্রজনন একটি বড় কর্মযজ্ঞ যেটি কর্ণফুলীতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি প্রায় ৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফলে অধিক উৎপাদনশীল গাভী উৎপাদিত হচ্ছে নিয়মিত। তবে জাত সংরক্ষণ যেহেতু অধিকতর টেকনিক্যাল বিষয়, খামারের তথ্যসমূহ নিয়মিত সংরক্ষণ করতে হয়, সেখানে কর্ণফুলীর খামারিরা কিছুটা পিছিয়ে আছে। এতে ইন ব্রিডিংসহ নানাবিধ জেনেটিক কারণে দুগ্ধ উৎপাদন কিছুটা ব্যাঘাত হতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে পরীক্ষামূলকভাবে চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের খামারির মাঝে ফ্রি রেজিস্ট্রারসহ রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করণের টেকনিক নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমন তালুকদার আরো বলেন, কর্ণফুলীতে প্রচুর পরিমাণে দুধ উৎপন্ন হলেও দুগ্ধজাত পণ্য খুব বেশি উৎপন্ন হয় না। দুধের পরিবর্তে দুগ্ধপণ্য যেমন পনির, ঘি, বাটার, দই ইত্যাদি যদি তৈরি করা যায় এবং সেটি যদি জনপ্রিয় করা যায় যায় তবে খামারিরা যেমন লাভবান হবেন, ঠিক তেমনি বৃহত্তর জনগোষ্ঠির প্রাণিজ পুষ্টির চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আগ্রহে চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে একটি প্রকল্পের উদ্যাগ নেওয়া  হয়েছে।

 

স্থানীয় সাংসদ ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের প্রথম সভায় যোগদানকালে খামারিদের পরিবেশ দূষণের অভিযোগের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমন তালুকদার উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ৫টি ওয়াস্ট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করলে ভূমি মন্ত্রী খুবই আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সমন্বয়ে দ্রুত প্রকল্প প্রণয়নের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের অভিযোগে যেন কোন খামার বন্ধ না হয় সে বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সবাইকে তাগিদ দেন।

 

জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, শহরতলীর উপজেলা কর্ণফুলী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়কের পাশে অবস্থিত। কোরীয় ইপিজেড ও চায়না ইকোনোমিক জোনের কারণে অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে এ এলাকার। এখানকার ডেইরি শিল্পকে কেন্দ্র করে যদি বগুড়ার দই, কুমিল্লার রসমলাইয়ের মতো কর্ণফুলীর নিজস্ব একটি প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং করা হয় তাহলে তা সহজে প্রচার-প্রসার ঘটবে। এতে যেমন নতুন নতুন কর্মসংস্থান যেমন সৃষ্টি হবে তেমনি কর্ণফুলীকে দেশবাসীর কাছে নতুনভাবে পরিচিত করবে। তাই আমরা দুগ্ধজাত পণ্য তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছি।

কর্ণফুলীতে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মিল্কভিটার পূর্ণাঙ্গ কারখানা

দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্ণফুলী উপজেলা ডেইরি খামারকে কেন্দ্র করে উপজেলার চরলক্ষ্যা কুইদ্দারটেক এলাকায় ৪৭ কোটি টাকায় ব্যয়ে পূর্ণাঙ্গ কারখানা স্থাপন করছে মিল্কভিটা।

 

মিল্ক ভিটা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে খামারিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যায় দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এ কেন্দ্রে থেকে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার লিটার দুধ সংরক্ষণ করে তা ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে প্রক্রিয়াজাত করে তা পুনরায় চট্টগ্রামে এনে বাজারজাত করা হয়। এতে প্রতি লিটার দুধে অতিরিক্ত ১৫-২০ টাকা খরচ হয়। এ দীর্ঘসূত্রতা ও অতিরিক্ত অর্থ খরচের জন্য দুধের কম মূল্য পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারিরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কারখানাটি স্থাপিত হলে চট্টগ্রামের দুধ চট্টগ্রামেই প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হবে এবং ওই কেন্দ্রেই মাখন, পনির ও বাটারসহ দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাত করা যাবে। এ কেন্দ্রে উৎপাদিত মিল্কভিটার পণ্য চট্টগ্রামে বাজারজাত করা হবে। এর ফলে পণ্য উৎপাদনে ব্যয় কমবে। এতে খামারিরা যেমনি লাভবান হবেন তেমনি মিল্ক ভিটার সকল পণ্য চট্টগ্রামে বাজারজাত করা সহজ হবে। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

 

জানতে চাইলে মিল্ক ভিটার পরিচালক নাজিম উদ্দীন হায়দার বলেন, প্রকল্পটি সম্পন্ন  হলে দুধ নিয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসার দীর্ঘ এ জটিলতা থাকবে না। তখন উৎপাদন খরচও অনেক কম হবে। ফলে খামারিরা তাদের দুধের ন্যায্য মূল্য পেয়ে লাভবান হবেন।

লেখক : নিজস্ব সংবাদদাতা, কর্ণফুলী

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট